Thank you for trying Sticky AMP!!

এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালকের পদ হারালেন সাংসদ পাপুল

কাজী শহীদ ইসলাম ওরফে পাপুল

মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলামকে (পাপুল) এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পরিচালক পদে থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান ও এনআরবিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান পদ থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি। প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত এ ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের শনিবারের সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

সাংসদ শহিদ ইসলাম ছিলেন ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্যোক্তাদের একজন। অনিয়ম ও জালিয়াতির কারণে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে। তখনই ব্যাংকটির বিভিন্ন দায়িত্বে আসেন শহিদ ইসলাম।

শহিদ ইসলামকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান তমাল পারভেজ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চাই ব্যাংক নিয়ে কোনো প্রশ্ন না উঠুক। ফৌজদারি অভিযোগ ওঠায় সাংসদ শহিদ ইসলামকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময়ে প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংক অনুমোদন পায়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফরাছত আলী ছিলেন ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান। ওই সময়ে তিনি বিভিন্ন দেশের বসবাসরত প্রবাসী ব্যবসায়ীদের ব্যাংকটির পরিচালক করেন। এর মধ্যে কুয়েত প্রবাসী শহিদ ইসলাম ব্যাংকটির পরিচালক হন। আর বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ফরাছত আলী ব্যাংকটি থেকে বাদ পড়লে তমাল পারভেজ ও শহিদ ইসলাম ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেন।

এনআরবিসি ব্যাংক

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটিতে শহিদ ইসলামের নামে ২ কোটি ২১ লাখ শেয়ার রয়েছে। আর তাঁর স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সেলিনা ইসলামের নামে রয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ শেয়ার। প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০ টাকা হলে ব্যাংকটিতে তাদের বিনিয়োগ প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। তবে এর বাইরেও তাঁর বড় অঙ্কের শেয়ার থাকার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আরজেএসসির তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি সাবেক পরিচালক সৈয়দ মুনসেফ আলীর কাছ থেকে ২০ লাখ, উদ্যোক্তা কানিজ ফারহানা রশিদ থেকে ৮৪ হাজার ৮০০, মইনুদ্দিন ইরতেজ সেকান্দার থেকে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫০ ও স্বামী শহিদ ইসলাম থেকে ১০ লাখ শেয়ার কিনেছেন সাংসদ সেলিনা ইসলাম। ব্যাংকটিতে শহিদ ইসলামের শেয়ার বেশি হওয়ায় প্রভাবশালী পরিচালক ছিলেন। নিজের স্ত্রীকেও ব্যাংকটির পরিচালক করতে কয়েক দফায় উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

শহিদ ইসলামকে গত বৃহস্পতিবার কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ধারার আল-আসাউয়ি তাঁকে ঘুষ দেওয়া, মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচার এবং রেসিডেন্ট পারমিট বিক্রির অভিযোগে ২১ দিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালকেরা তাকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাঁকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।