জালিয়ার দ্বীপে বিনিয়োগ করতে চায় ৭টি প্রতিষ্ঠান

২৭২ একর আয়তনের জালিয়ার দ্বীপে গড়ে উঠবে নাফ ট্যুরিজম পার্ক l বেজার সৌজন্যে
২৭২ একর আয়তনের জালিয়ার দ্বীপে গড়ে উঠবে নাফ ট্যুরিজম পার্ক l বেজার সৌজন্যে

কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীর মোহনার জালিয়ার দ্বীপে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), যার নাম হবে নাফ ট্যুরিজম পার্ক।
ইতিমধ্যে এই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে উন্নয়নকারী নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের সাতটি প্রতিষ্ঠান সেখানে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। ২০১৮ সালে দ্বীপটিতে পর্যটকদের যাওয়ার উপযোগী করতে চায় বেজা।
জালিয়ার দ্বীপটি নাফ নদীর মাঝখানে অবস্থিত। এর একপাশে মিয়ানমার, অপর পাশে বাংলাদেশের নেটং পাহাড়। প্রায় ২৭২ একর আয়তনের এই দ্বীপে দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাছের চাষ করতেন। তবে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর উদ্যোগে দ্বীপটি দখলমুক্ত করা হয়। এখন সেখানে রাস্তাঘাট ও দ্বীপে যাওয়ার জন্য একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৯৫ কোটি টাকা।
২০১৫ সালে বেজার চেয়ারম্যান বেশ কয়েকজন সচিবকে দ্বীপটি দেখাতে নিয়ে যান এবং নিজের পরিকল্পনার কথা জানান। তারপরই বেজাকে দ্বীপটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পর্যটনকেন্দ্র করতে গত ২ জানুয়ারি দরপত্র আহ্বান করে বেজা। এতে এখন পর্যন্ত ৭টি কোম্পানি অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। ২ মার্চ দরপত্র জমা দেওয়ার দিন।
বেজা সূত্র জানিয়েছে, যেসব কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে, তারা চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের স্বনামধন্য পর্যটন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। তবে বেজা এসব প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চায় না। অবশ্য সূত্র জানিয়েছে, দেশের পাঁচতারকা হোটেলের মালিকেরা জালিয়ার দ্বীপে পর্যটনকেন্দ্র করতে আগ্রহী। বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তারা যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করতে চায়। এ জন্য তারা যৌথভাবে দরপত্রে অংশ নেবে। আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে নিলাম-পূর্ব সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা থেকে জালিয়ার দ্বীপের দূরত্ব ৪৫৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৮৫ কিলোমিটার। তবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে এর দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। এই দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপে যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। দ্বীপটিতে বেজা একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করছে। উন্নয়নের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান সেখানে রিসোর্ট করবে। পুরো দ্বীপে থাকবে কেব্ল কার, ঝুলন্ত রেস্তোরাঁ, ইকো-কটেজ, কনভেনশন সেন্টার, সুইমিং পুল, অ্যাকোয়া লেক, ফান লেক, মাছ ধরার জেটি, বিনোদন পার্ক, শিশুপার্ক ইত্যাদি।
নাফ ট্যুরিজম পার্কের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য গত বছর জার্মানিভিত্তিক ইউনিকনসাল্ট নামের একটি কোম্পানিকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল বেজা। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কক্সবাজারে কমপক্ষে ২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে যাবে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ যাবে নাফ ট্যুরিজম পার্কে।
জানা গেছে, টেকনাফের সাবরাংয়েও একটি পর্যটনকেন্দ্র করার পরিকল্পনা ছিল বেজার। তবে আগে নাফ ট্যুরিজম পার্কের কাজ এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, নাফ ট্যুরিজম পার্ক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবে। এটি দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে।