Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকায় প্রথমবারের মতো 'উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড - ওয়াও' ফেস্টিভ্যাল

নারী ও কিশোরীদের ক্ষমতায়নের অগ্রগতিতে বৈশ্বিক আন্দোলন সৃষ্টিতে ঢাকায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ‘উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড—ওয়াও’ ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

নারী ও কিশোরীদের ক্ষমতায়নের অগ্রগতিতে বৈশ্বিক আন্দোলন সৃষ্টিতে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ওয়াও ফাউন্ডেশনের অংশীদারত্বে ঢাকায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ‘উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড—ওয়াও’ ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুক্র ও শনিবার এ ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে।

‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯’ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাসিম ফেরদৌস, ওয়াও ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জুড কেলি সিবিই এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের উপপরিচালক অ্যান্ড্রিউ নিউটন।

অনুষ্ঠানে দীপু মনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জেন্ডার সমতার ভিত্তিতে সমাজ বিনির্মাণের মূলে রয়েছে নারী ও কিশোরীদের অগ্রগতি। এসডিজি অর্জনে নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও বিশেষ জোর দিচ্ছে। যদিও এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে আমাদের গর্ব করার সুযোগ রয়েছে, তবুও কিছু ক্ষেত্রে এখনো কিছু বাধা রয়ে গেছে। এসব বাধা নিরসনে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম অনুশীলনীগুলো জানা এবং নারী ও কিশোরীদের অগ্রগতির পথ সুগম করে দিতে দেশে “উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ডে”র মতো গণ–অংশগ্রহণমূলক প্ল্যাটফর্ম শুরু করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা আশা করি এ রকম একটি ফেস্টিভ্যাল প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের নারী ও কিশোরীদের জীবনে গঠনমূলক পরিবর্তন আনবে।’

জুড কেলি বলেন, বাংলাদেশে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল শুরু করা অত্যন্ত সময়োপোযোগী একটি আয়োজন। কেননা, নারীদের প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলোই তুলে আনে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল, আর দেখাতে চায় কীভাবে একসঙ্গে সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে সমাজে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। নাটক, গান, শিল্প, গল্প ও আলোচনার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে ওয়াও নারীদের নিজেদের গল্প সবার সামনে তুলে ধরতে ও সমমনা সবার সঙ্গে এক কণ্ঠে আওয়াজ তোলার সুযোগ তৈরি করে দেয়। যাদের সবার হয়তো এর আগে নিজেদের মধ্যে দেখাও হয়নি।

সব ওয়াও ফেস্টিভ্যালেই নারী ও কিশোরীদের অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার যে ধারাবাহিকতা, সেটি অক্ষুণ্ন থাকছে ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যালেও। সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে উঠে আসা নারী নেতৃত্বের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আয়োজিত হতে যাওয়া উৎসবটি স্থানীয় আমেজে আন্তর্জাতিকমানের অভিজ্ঞতা দিতে সমর্থ হবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের। এ উৎসবে আয়োজিত আন্তসাংস্কৃতিক সংলাপের মাধ্যমে নারী ও কিশোরীদের সম্ভাবনার পথে বাধা সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও সংকটগুলো নিরসনে সৃজনশীল সমাধান খুঁজে বের করার পথে সহায়ক হবে। সমাজের সব স্তর থেকে আমন্ত্রিত অতিথি, বক্তা ও অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসব অংশগ্রহণকারীদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ও জেন্ডার সমতার ভিত্তিতে সমাজ বিনির্মাণে সহায়ক করে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদী আয়োজকেরা।

ফেস্টিভ্যালে প্রাণবন্ত মেলারও আয়োজন করা হয়, যেখানে নির্বাচিত নারী উদ্যোক্তারা তাঁদের পণ্য বিক্রির পাশাপাশি নারীদের মাঝে সচেতনতা তৈরি ও জেন্ডার সমতা আনয়নে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯’ ফেস্টিভ্যালে আসা দর্শনার্থীদের জন্য উৎসবজুড়ে আয়োজন ছিল নির্বাচিত চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পারফরম্যান্স আর্ট, শিশুদের জন্য আন্ডার টেন’স ফেমিনিস্ট কর্নার ও পূর্ণাঙ্গ মঞ্চনাটক পরিবেশনার।

গত বছর ব্রিটিশ কাউন্সিল রংপুর, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে ওয়াও চ্যাপ্টারসের কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে। দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে ওয়াও চ্যাপ্টারস আয়োজনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যাল। এর আগে অনুষ্ঠিত ওয়াও চ্যাপ্টারসে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয়। দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরী ও নারীরা যেসব সমস্যা বা বাধার মুখোমুখি হন, তা নিয়ে এবং পাশাপাশি তাঁদের নানা সফলতাকে উদযাপন করতে অনুষ্ঠিত হবে ‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯’।