প্রতিযোগিতায় টিকতে নীতিসহায়তা জরুরি

লুৎফুল বারী, পরিচালক, মেঘনা গ্রুপ
 লুৎফুল বারী, পরিচালক, মেঘনা গ্রুপ

বাইসাইকেল যে একটি পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসহায়ক বাহন, কোভিড-১৯ এসে তা যেন হাতেনাতে দেখিয়ে গেল এবার। কোভিডের কারণে মানুষ একদিকে গণপরিবহনে চলতে পারছে না, অন্যদিকে পারছে না জিমনেশিয়ামে যেতে। উভয় সমস্যারই সমাধান হচ্ছে বাইসাইকেল। তারই প্রমাণ ২০২০-২১ অর্থবছরে বাইসাইকেল রপ্তানির ৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।

বাইসাইকেল একটি শ্রমঘন শিল্প এবং বিশ্বে বছর-বছর সাইকেলের বাজার বড় হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পণ্যটির সম্ভাব্য বিশ্ববাজার ৫ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের। এতে বাংলাদেশের অবদান নামমাত্র। সে হিসেবে বাংলাদেশি সাইকেল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও বেশি করে জায়গা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর ইইউর মধ্যে জার্মানিতে আমাদের বাইসাইকেল বেশি যায়। ইইউর বাইরে বাজার আছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি আফ্রিকার দেশগুলোতেও। কিন্তু চীনের কারণে প্রতিযোগিতায় টেকা যাচ্ছে না।

এ পণ্য রপ্তানিতে আগে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা থাকলেও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এটা ছিল সরকারের পক্ষ থেকে আগে দেওয়া বন্ড সুবিধার বিকল্প। রপ্তানিকারকেরা সুবিধাটি ভোগ করতে পারেননি বলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন। কিছুটা সুরক্ষা দিতে হলে এ খাতের করপোরেট কর পোশাকের মতো অন্তত ১২ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত।

এদিকে বাইসাইকেলের রং বলতে একটি জিনিস আছে, যা আমদানি করতে হয়। এটি দেশে হয় না। এর ওপর করভার ৮৯ শতাংশ, যা অস্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক বাজারে এ পণ্যকে প্রতিযোগিতামূলক করতে হলে বাইসাইকেলের বিমা প্রিমিয়াম পোশাকের মতো দশমিক ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। সব মিলিয়ে বলতে গেলে বাইসাইকেল রপ্তানি প্রতিযোগিতায় টিকতে এবং বিশ্ববাজারে পোক্ত জায়গা তৈরি করতে হলে সরকারের নীতিসহায়তা এখন জরুরি।