ব্যক্তি–আমানতকারীদের টাকা ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দেওয়াসহ ৪ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যক্তি–আমানতকারী ফোরাম। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে
ব্যক্তি–আমানতকারীদের টাকা ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দেওয়াসহ ৪ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যক্তি–আমানতকারী ফোরাম। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের আমানতকারীরা টাকা ফেরত চান

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের আমানতকারীরা টাকা ফেরত চান। তাঁদের ক্ষতিপূরণসহ ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া লুট হওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধারে পি কে হালদারকে দেশে আনাসহ মোট চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যক্তি-আমানতকারী ফোরাম।

আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় আমানতকারী ফোরাম।

সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সমন্বয়ক তাসদিক আহমেদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, পি কে হালদার যখন ২০১৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেন, তখন এটি একটি ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছিল। বক্তব্যে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও মহাব্যবস্থাপক শাহ আলম সরাসরি জনসাধারণের আমানত লুটপাটে এই গোষ্ঠীকে সহায়তা করেছেন। এর ফলে আমানতকারীরা বিগত সাত বছর ধরে তাঁদের আমানত ফেরত পাচ্ছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আট মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নরের সঙ্গে আমরা দেখা করার চেষ্টা করছি। একাধিকবার চিঠি, ই–মেইলসহ নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করার পরও তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করছেন না। আমরা ব্যক্তি আমানতকারীরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে আমাদের দাবি ও বক্তব্য পেশ করতে চাই।’

ভারতে আটক থাকা পি কে হালদার লুট করা অর্থ কোথায় গেছে এর বিস্তারিত জানেন। তাই লুট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধারের জন্য তাঁকে অবিলম্বে আইনি হেফাজতে বাংলাদেশে ফেরত আনার জোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সমন্বয়ক তাসদিক আহমেদ বলেন, আমানতকারীদের আজীবনের সঞ্চয় সাত বছর ধরে আটকে আছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে প্রায় ১ হাজার ৪৭০ জন ব্যক্তি আমানতকারীর সঞ্চয় ছিল মন্তব্য করে তাসদিক আহমেদ বলেন, কারও কারও এক কোটি টাকার ওপরে আমানত ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, লুট হওয়া অর্থ উদ্ধার এবং ব্যক্তি আমানতকারীদের আমানত ফেরত—এই দুটিকে পৃথকভাবে ধরে সরকারের পরিকল্পনা করা উচিত। সরকারের মূলধারার ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সংস্কার গুরুত্বের সঙ্গে করার দাবি জানান আমানতকারীরা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যক্তি-আমানতকারী ফোরামের সভাপতি বাদল নন্দী, আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামাল ও প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারীরা।

২০১৫ সালে শেয়ার কিনে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় হাল ইন্টারন্যাশনাল, বিআর ইন্টারন্যাশনাল, নেচার এন্টারপ্রাইজ ও নিউ টেক এন্টারপ্রাইজ। এসব প্রতিষ্ঠান ২০১৫ সালেই কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। আবার হাল ইন্টারন্যাশনালের ৭০ শতাংশ শেয়ারের মালিক পি কে হালদার নিজে; তাঁর ভাই প্রীতিশ কুমার হালদারের শেয়ার ১০ শতাংশ।

২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর নামে-বেনামে টাকা বের করেন পি কে হালদার। পরে ব্যবস্থাপনায় নিজের পছন্দমতো লোকদের বসান তিনি। চার পরিচালকের মাধ্যমে ৩৪টি হিসাবে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়। এ ছাড়া শীর্ষ কর্মকর্তারা ঋণের নামে ১৫০ কোটি টাকা নিয়ে যান। এসব অনিয়মের জের টানতে হচ্ছে সাধারণ আমানতকারীদের।