Thank you for trying Sticky AMP!!

চাল, আটা, তেলের মতো নিত্যপণ্যের দাম এখনো চড়া

বাজারে মাছ-মাংস-ডিমের দাম কমে এলেও এখনো চড়া দামেই কিনতে হচ্ছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, ভোজ্যতেলসহ অধিকাংশ নিত্যপণ্য। পেঁয়াজ, রসুন ও আদার মতো পণ্যের দামে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে শীতের মৌসুম হওয়ায় বাজারে সবজির দাম এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল বৃহস্পতিবারের বাজারদরের তালিকানুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। মাঝারি চালের কেজি পড়ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। আর সরু চালের কেজি পড়ছে ৬২ থেকে ৭৫ টাকা। টিসিবির হিসাবের বাইরে বাজারে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৯৫ টাকা পর্যন্ত দেখা গেছে।

ভোগ্যপণ্যের দাম নতুন করে বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমদানিতে খরচ এখনো বেশি পড়ছে। তাতে আপাতত দাম কমার পরিস্থিতিও নেই।
শফিউল আতহার, ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী কোম্পানি টিকে গ্রুপের পরিচালক

চালের দামে গত এক সপ্তাহে বড় কোনো পরিবর্তন না থাকলেও সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ শতাংশ। মাঝারি চালের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর সরু চালের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান প্রথম আলোকে বলেন, ধানের উৎপাদন ভালো। নতুন ধানের চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। তাতে চালের দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

চালের মতো ডালের বাজারও এখনো চড়া। টিসিবির হিসাবে বাজারে মোটা, মাঝারি ও সরু মসুর ডালের কেজি ১০৫ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা। গত এক সপ্তাহে ডালের দামে কোনো ওঠানামা নেই। এমনকি টিসিবির হিসাবে গত এক মাসের মধ্যে ডালের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

এখন তো সবকিছু দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয়। মাঝেমধ্যে কোনো পণ্যের দাম একটু কমলে তাই ভালোই লাগে। তবে মাছ-মাংসের দাম খুব বেশি যে কমেছে, তা বলা যাবে না।
সেলিম উদ্দিন, রাজধানীর শাহজাহানপুর বাজারের ক্রেতা

টিসিবির হিসাবে আটা-ময়দার বাজার অবশ্য এখনো বাড়তির দিকে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটার দাম পড়ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপরে। প্যাকেটজাত ময়দার কেজি এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ময়দার দামও কেজিতে ৪ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১ শতাংশের মতো বেড়েছে।

ভোগ্যপণ্য বিপণনকারী কোম্পানি টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার প্রথম আলোকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম নতুন করে বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমদানিতে খরচ এখনো বেশি পড়ছে। তাতে আপাতত দাম কমার পরিস্থিতিও নেই।

চিনির বাজারে অস্থিরতা

চিনির বাজার এখনো অস্থির। খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। তবে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ একেবারে নেই বললেই চলে। সরকার খুচরা বাজারে খোলা চিনি ১৩০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় বেঁধে দিয়েছে। এই দর কার্যকর হতে দেখা যায়নি।

গত বুধবার রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আপাতত চিনির দাম কমানোর কোনো সুযোগ নেই।

গতকাল রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর ও মালিবাগ বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছু বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬০০ টাকায় নেমে আসায় অন্যান্য মাংস, মাছ ও ডিমের দাম কিছুটা নেমে এসেছে। সাদা ও বাদামি রঙের ডিমের ডজন এখন ১২০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি নেমেছে ১৭০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি পড়ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা।

দাম কমেছে মাছের

বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো। তাতে দামও কিছুটা কমেছে। বেশি কমেছে চাষের মাছে। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পড়ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজারে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। তাতে আমদানি করা পেঁয়াজ আসছে কম। চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে পেঁয়াজ এসেছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন।

রাজধানীর শাহজাহানপুর বাজারের ক্রেতা সেলিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এখন তো সবকিছু দাম বেশি দিয়ে কিনতে হয়। মাঝেমধ্যে কোনো পণ্যের দাম একটু কমলে তাই ভালোই লাগে। তবে মাছ-মাংসের দাম খুব বেশি যে কমেছে, তা বলা যাবে না।