Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ধরে রাখা যায়নি: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার দুই-শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পর দেশে প্রবাসী আয়ের যে প্রবাহ তৈরি হয়েছিল, তা ধরে রাখা যায়নি। প্রতিবছর অনেক মানুষ কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। বর্তমানে এক কোটি মানুষ বিদেশে কাজ করছেন, কিন্তু প্রবাসী আয় সেভাবে বাড়ছে না।

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বা পিএফএম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে এই সম্মেলন আয়োজন করেছে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্র্যাকটিস দপ্তরের ব্যবস্থাপক হিশাম ওয়ালি ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশপ্রধান (কান্ট্রি ডিরেক্টর) আবদুলায়ে সেক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান, মোহাম্মদ তারেক, ফজলে কবীর, মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী আয় বাড়াতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার হাতে নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি করা গেলে এক প্রবাসীর আয় দিয়েই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ অনেক সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রবাসী আয় বাড়ানোর জন্য আপনারা এভিডেন্স বা তথ্য-প্রমাণনির্ভর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করুন। মাইক্রো লেভেলে কেস টু কেস উদাহরণ দেখুন; তাহলে আমাদের প্রবাসী আয় ও রাজস্ব বাড়বে।’

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশপ্রধান (কান্ট্রি ডিরেক্টর) আবদুলায়ে সেক বলেন, পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট (পিএফএম) হচ্ছে দেশের সুশাসন কাঠামোর মেরুদণ্ড। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, পিএফএফের মাধ্যমে উন্নত পরিষেবা দেওয়া, দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গভর্ন্যান্স গ্লোবাল প্র্যাকটিস দপ্তরের ব্যবস্থাপক হিশাম ওয়ালি বলেন, অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে সুশাসন। সুশাসনের কেন্দ্রে আছে পিএফএম। সরকারের পিএফএম কার্যক্রম দুর্বল থাকলে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও দুর্বলতা থাকে। সে জন্য সরকারকে স্থানীয় ও অন্য দেশের পিএফএম কার্যক্রমের সফলতা ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘কার্যকর পাবলিক ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্টের জন্য এই খাতে পেশাদারত্ব তৈরি করা প্রয়োজন। একজন মানুষ সব কাজ করবে—এই ধারণা থেকে বের হয়ে একেক বিষয়ে একেকজন পারদর্শী হবেন, সেই লক্ষ্যে কাজ করা উচিত।’

সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং বিভাগ থেকে অপারেশনাল প্ল্যানিং কার্যক্রম আলাদা করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ভারতেও এমনটা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া স্থানীয় সরকারের বাজেট তৈরি ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করায় জোর দেন তিনি।

এখন সম্পদ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক। দেশের পিএফএম ব্যবস্থা এখনো অনেক দুর্বল। এক বছরের জন্য বাজেট করা হয়। এ কারণে নির্দিষ্ট দপ্তর বা মন্ত্রণালয়ের সম্পদ সম্পর্কে জানা যায় না। তাই সব সরকারি সংস্থায় অভ্যন্তরীণ বাজেট ও নিরীক্ষাব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।

আরেক সাবেক অর্থসচিব ফজলে কবির বলেন, আমলাতন্ত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার যেকোনো পরিবর্তনের বিষয়ে একধরনের বিপরীত চিন্তা আছে। ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য এ ধরনের চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা প্রয়োজন।