বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ যাচাই করা হবে: বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ নতুন করে যাচাই করা হবে। এসব ঋণের জামানত ঠিক আছে কি না, তা দেখা হবে। না থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যাংক পরিচালকদের জবাবদিহি করতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কার: চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা দরকার। ভালো নেতা দরকার। এ জন্য সরকারের কাছে আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সরকার এই আইন পাস করে দিলে সব করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার পাশাপাশি ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সব সাধারণ আমানতকারী পুরো টাকা ফেরত পাবেন। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারী একটা অংশ ফেরত পাবে।

একই অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন একটি সন্ধিক্ষণ। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্যাংকিং খাতকে কীভাবে সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী করা হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।’

আজ রাজধানীতে ব্যাংক খাত সংস্কার নিয়ে ইআরএফ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ।অন্যান্য অতিথিরা

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পরিষ্কার করতে হবে যে তারা কি আগের মতো ক্ষমতাশালী পুঁজিপতিদের হাতে ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করতে দেবেন, নাকি জনগণের কল্যাণে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পুঁজি জোগানের জন্য এই খাতকে ব্যবহার করবেন।

ফাহমিদা খাতুনের মতে, দিনের শেষে অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়িত হয় ‘রাজনৈতিক অর্থনীতির’ কবলের মধ্যে পড়ে। বরং সেই চেহারা ভালো না হলে তা জনগণের কল্যাণে আসে না।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কার: চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের মাধ্যমে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এ জন্য এখন খেলাপি ঋণ ৩৬ শতাংশ পৌঁছে গেছে। এখন যে সংস্কার হচ্ছে, তা রাজনৈতিক সরকার কতটা এগিয়ে নেবে—তা গুরুত্বপূর্ণ।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।