Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ ব্যাংক

স্বেচ্ছায় না হলে চাপ দিয়ে ব্যাংক একীভূত করা হবে, জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই আলোচনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানিয়ে দিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যে নিজেদের ইচ্ছায় একীভূত না হলে আগামী বছর থেকে চাপ দিয়ে ব্যাংক একীভূত করা হবে।

আজ সোমবার দুপুরে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় এমন মতামত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সভায় উপস্থিত একাধিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যাংক কর্মকর্তা বিষয়টি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও জেষ্ঠ কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Also Read: ৮–১০টি দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার পরামর্শ গভর্নরের

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভাতেও একই মতামত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছিলেন, দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৪০টির মতো ব্যাংক ভালো অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি ব্যাংক একীভূত হতে পারে। একীভূত হওয়ার লক্ষ্যে ভালো ও দুর্বল ব্যাংকের এমডিদেরকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরুর পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে, এমন আলোচনার মধ্যে আজ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যান বিএবি প্রতিনিধিদল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক একীভূত করার প্রেক্ষাপট, প্রক্রিয়া ও সময়সীমা জানানো হয় প্রতিনিধিদলটিকে।

Also Read: দ্রুত শুরু হোক ব্যাংক একীভূত করার কাজ

সভা শেষে নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংক একীভূত করার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভারত, মালয়েশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোয় ব্যাংক একীভূত হয়েছে। যেকোনো ব্যাংকের পরিস্থিতি কোনো কারণে খারাপ হয়ে যেতে পারে। সারা পৃথিবীতে ব্যাংক খারাপ হয়, আমেরিকাতেও হয়েছে। আমাদের এখানে লক্ষ করা যাচ্ছে, কিছু ব্যাংক খারাপ হয়ে পড়েছে। তবে বেশির ভাগ ব্যাংক ভালো অবস্থায় আছে।’

নজরুল ইসলাম মজুমদার আরও বলেন, ‘দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের মতামত জানতে চেয়েছিল। আমরা বলেছি জাতীয় স্বার্থে ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত। আমরা শেয়ারধারী, আজীবন চেয়ারম্যান পদে থাকব না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম আসবে।’ গভর্নর বলেছেন, এক বছরের মধ্যে একীভূত করার কাজ শেষ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিরীক্ষা কমিটির হিসেবে ১০ শতাংশ ব্যাংক খারাপ করছে। এটা হতেই পারে।

Also Read: সবল ও দুর্বল ব্যাংক একীভূত করা সহজ নয়

বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘ব্যাংক একীভূত করা হলে ভালো-খারাপ কোনো ব্যাংকের ক্ষতি হবে না। একীভূত হলে খারাপ ব্যাংক ভালো হবে, ভালো ব্যাংক আরও ভালো হবে। এতে আমাদের কোনো উদ্বেগ নেই।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংক খাতের জন্য পথনকশা দেওয়া হয়েছে। সেখানে ব্যাংক একীভূত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ব্যাংক অধিগ্রহণ ও একীভূত হওয়া সারা পৃথিবীর একটি চর্চা। আমরা এ নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করব। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দুর্বল ব্যাংক শক্তিশালী করতে এই উদ্যোগ। এটা ব্যাংক চেয়ারম্যানদের জানানো হয়েছে।’

মেজবাউল হক আরও বলেন, শুধু দুর্বল ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সঙ্গে নয়, দুই সবল ব্যাংক আরও শক্তিশালী হতে একীভূত হতে পারে। যাদের বড় গ্রাহক রয়েছে, সেই গ্রাহক সেই ব্যাংকের সম্পদ। ফলে ব্যাংকের সম্পদ খারাপ হলেও গ্রাহক সংখ্যা দেখে কেউ দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে পারে। নিজ ইচ্ছায় ব্যাংক একীভূত হতে পারে, আবার চাপ দিয়েও এটা করানো হতে পারে।