Thank you for trying Sticky AMP!!

পদোন্নতি পেতে একসঙ্গে পরীক্ষায় বসছেন ৭৮ হাজার ব্যাংকার

ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (আইবিবি) ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা (সাবেক ব্যাংকিং ডিপ্লোমা) পরীক্ষার আয়োজন করে

বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য বাধ্যতামূলক করা ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা (সাবেক ব্যাংকিং ডিপ্লোমা) আগামীকাল শনিবার শুরু হচ্ছে। এবারের ৯৬তম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৭৮ হাজার ব্যাংকার। ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় এর আগে কখনোই এত ব্যাংকার একসঙ্গে অংশ নেননি। সর্বশেষ ৯৫তম পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৩৬ হাজার ব্যাংকার।

ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (আইবিবি) এ পরীক্ষার আয়োজন করে। চলতি বছরের শুরুর দিকে পদোন্নতিতে এ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

Also Read: ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন,পরীক্ষা হবে শুধু বিভাগীয় শহরে

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ব্যাংক খাতে কর্মী রয়েছেন প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার। ফলে এবার প্রায় ৩৭ শতাংশ ব্যাংকার একসঙ্গে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষায় বসছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক থেকে পরিচালক (সাবেক জিএম) হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে আগে শুধু বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার প্রথম পর্ব পাস করা বাধ্যবাধকতা ছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তা পরিবর্তন করে পরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতিতে দুই পর্ব পাসের নিয়ম চালু করেন। আর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থেকে তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতিতে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। এই নিয়ম ২০২৪ সাল থেকে কার্যকর হবে। ফলে এবার সদ্য যোগদান করা কর্মকর্তা থেকে ৫৭-৫৮ বছর বয়সী কর্মকর্তারাও এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন অতিরিক্ত পরিচালক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা একটা অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত। চাকরির শেষ সময়ে এসে পদোন্নতির জন্য এই পরীক্ষায় বসা খুবই অস্বস্তিকর। বিশেষ করে তিন ঘণ্টা বসে লিখিত পরীক্ষা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ, কম্পিউটারে কাজ করার কারণে দীর্ঘসময় লেখা কঠিন হয়ে পড়বে। পরীক্ষা নিতেই হলে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে নেওয়া যেত। এতে সবার জন্য ভালো হতো।’

জানা গেছে, আগে রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের ২৪টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। এবার অংশগ্রহণকারী বাড়লেও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার পাশাপাশি ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রংপুর ও বরিশালে। আগামীকাল পরীক্ষা শুরু হবে। সকাল ও দুপুর দুই বেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ও ১০ জুনও একইভাবে পরীক্ষা হবে।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের ৫৫ বছর বয়সী একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরির শেষ সময়ে এসে পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। কারণ, একটা পদোন্নতি নিয়ে অবসরে যেতে চাই। শেষ সময়ে এসে পরীক্ষায় বসা খুব কষ্টকর।’

জানা যায়, ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। একই সঙ্গে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পাসের নম্বর ৫০ থেকে কমিয়ে ৪৫ করা হয়েছে।

এবারের পরীক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাসের নম্বর কমানো হয়েছে। আমরাও বিষয়ভিত্তিক ক্লাসের আয়োজন করেছি। আশা করছি, ব্যাংকাররা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। এতে পাসের হার আগের চেয়ে বাড়বে।
লাইলা বিলকিস আরা, মহাসচিব, আইবিবি

জানতে চাইলে আইবিবির মহাসচিব লাইলা বিলকিস আরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারের পরীক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাসের নম্বর কমানো হয়েছে। আমরাও বিষয়ভিত্তিক ক্লাসের আয়োজন করেছি। আশা করছি, ব্যাংকাররা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। এতে পাসের হার আগের চেয়ে বাড়বে। এই পরীক্ষা পুরোপুরি নকলমুক্ত করতে জেলার পরিবর্তে বিভাগীয় পর্যায়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ায় আইবিবির আয় বাড়ল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লাইলা বিলকিস আরা বলেন, ‘আগে পরীক্ষায় অংশ নিতে ১ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হতো। এখন বিষয়ভিত্তিক ৩০০ টাকা। এতে আয় কমেও যেতে পারে। একটি বিষয়ের পরীক্ষা নিতে আমাদের ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ পড়ে যায়।’

Also Read: আইবিবির আয় বাড়ানোর দায় ব্যাংকারদের ঘাড়ে