আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)

জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার এলে পরবর্তী কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে এই মুহূর্তে ঋণের কিস্তির দরকার নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আইএমএফকে আমরা বলেছি, এই মুহূর্তে আমাদের ঋণের কিস্তির দরকার নেই। তারা বরং আগে পর্যালোচনা করুক।’

আইএমএফের সঙ্গে চলমান ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ পাওয়া প্রসঙ্গে আজ রোববার প্রথম মুখ খুললেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ষষ্ঠ কিস্তির অর্থ নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবে আইএমএফ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সংস্থাটির আরেকটি মিশন বাংলাদেশে আসবে। ওই সময় তারা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেবে।

নির্বাচিত সরকার কতটা ঋণ চায়, তা নিয়ে ফেব্রুয়ারির মিশনে আলোচনা করবে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশ ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তবে তাদের কিছু পরামর্শ আছে। যেমন বাংলাদেশকে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে এবং ব্যয় বাড়াতে হবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী সরকারকে আইএমএফের ঋণ, সংস্কারের শর্তসহ সব বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ তৈরি করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। পরে এ বছরের জুন মাসে আইএমএফের পর্ষদ বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির মেয়াদ বাড়িয়েছে ছয় মাস এবং বাড়তি ৮০ কোটি ডলার যুক্ত করেছে। এভাবেই ঋণ কর্মসূচির মোট আকার এখন ৫৫০ কোটি ডলার।

আইএমএফ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার, ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার এবং ২০২৫ সালের জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৩ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ পাঁচ কিস্তিতে বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে পেয়েছে ৩৬৪ কোটি ডলার। বাকি আছে ১৮৬ কোটি ডলার।

গত ২৯ অক্টোবর থেকে দুই সপ্তাহের সফরে আইএমএফের একটি মিশন রয়েছে ঢাকায়। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করছে এ মিশন। ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ‘পরিমাণগত কর্মক্ষমতা মানদণ্ড’ (কোয়ান্টিটেটিভ পারফরম্যান্স ক্রাইটেরিয়া বা কিউপিসি) কতটা পূরণ করছে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

কিউপিসি হচ্ছে আইএমএফের বাধ্যতামূলক শর্ত। গত মে মাসে কিউপিসির কিছু শর্ত যুক্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সীমা নির্ধারণ, জ্বালানি ও সার আমদানির বকেয়া পরিশোধ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ। এ তালিকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের শর্তও আছে। এসব শর্ত পূরণ না হলে আইএমএফ পরের কিস্তি দেয় না। তবে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ চাইলে কোনো কোনো শর্তের বিষয়ে পূর্ণ বা আংশিক অব্যাহতি দিতে পারে।