গরুর লবণাক্ত লোমশ চামড়া রপ্তানির অনুমতি

লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ কাজে ব্যস্ত আড়ত শ্রমিকেরা
ফাইল ছবি

লবণাক্ত লোমশ ‘বোভাইন হাইডের গরুর চামড়া’ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ চামড়া সি ক্যাটাগরি বা নিম্ন শ্রেণির চামড়া হিসেবে পরিচিত। রাজশাহীর মোহনপুরের বায়ো ইনগ্রেডিয়েন্টস নামের প্রতিষ্ঠানকে তুরস্কে রপ্তানির জন্য ২০ জুলাই এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এ দফায় রপ্তানি করবে ১৫ লাখ পিস লবণাক্ত লোমশ চামড়া। আর অনুমতি বহাল থাকবে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও কয়েকটি শর্তে প্রতিষ্ঠানটিকে এ চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, রপ্তানি করতে গেলে বিদ্যমান ২০২১-২৪ রপ্তানি নীতি অনুসরণ করতে হবে। এ দফার রপ্তানি নির্দিষ্ট পরিমাণের জন্য প্রযোজ্য। আরও রপ্তানি করতে হলে আবার আবেদন করতে হবে।

এ ছাড়া জাহাজীকরণ শেষে রপ্তানির সব কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে। যে দেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার বাইরে অন্য কোনো দেশে এই চামড়া রপ্তানি করা যাবে না। এ ছাড়া সরকার চাইলে যেকোনো সময় রপ্তানি বন্ধ করতে পারবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আজ রোববার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এটা ঠিক সরাসরি গরুর কাঁচা চামড়া নয়; বরং বলা যায়, গরুর চামড়ার একটা বিশেষ অংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, যে প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করলে একই ধরনের অনুমতি অন্য প্রতিষ্ঠানও পেতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে গত বছর চারটি প্রতিষ্ঠান ২০ লাখ পিস গরুর লবণাক্ত লোমশ চামড়া রপ্তানি করেছে। এ বছর একটিকে অনুমতি দেওয়া হলেও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কী ধরনের চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা বুঝতে পারছেন না বলে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

গরু, মহিষ ও ষাঁড়ের চামড়াকে বোভাইন হাইড বলা হয়। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলছেন, লবণাক্ত লোমশ ‘বোভাইন হাইডের গরুর চামড়া’ হচ্ছে জবাইয়ের পর লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা লোম থাকা গরুর চামড়া। প্রতিবছর কোরবানির পর এসব চামড়া কম দামে বিক্রি হয়। বিক্রি করতে না পেরে অনেকে তা মাটিতেও পুঁতে রাখেন। লবণাক্ত লোমশ বোভাইন হাইডের গরুর চামড়া হচ্ছে নিম্ন শ্রেণির চামড়া, যা দিয়ে চামড়াজাত ভালো কোনো পণ্য তৈরি করা যায় না।

বায়ো ইনগ্রেডিয়েন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা লবণাক্ত লোমশ বোভাইন হাইডের গরুর চামড়া রপ্তানির অনুমতি পেয়েছি। এ চামড়া সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়, যা পরিবেশদূষণের জন্যও দায়ী। আশা করছি, বিধিবিধান মেনে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি করব এবং যতটুকু পারি কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আয় করব।’