Thank you for trying Sticky AMP!!

আর্জেন্টিনার চেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল

সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে আর্জেন্টিনায় রপ্তানি হয়েছে ৯৫ লাখ ডলারের পণ্য আর ব্রাজিলে হয়েছে প্রায় ১১ কোটি ডলারের পণ্য।

কাতার বিশ্বকাপের শুরু থেকেই একের পর এক অঘটন ঘটছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচ হেরে যায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয় পায় মেসির দল। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় পায় ব্রাজিল। তবে নেইমার পড়েন ইনজুরিতে, তা নিয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা আছে দুশ্চিন্তায়।

ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দল নিয়ে বাংলাদেশে সমর্থকদের উত্তেজনার যেন শেষ নেই। মাঠে–ঘাটে, বাসে–ট্রেনে, অফিসে–বাসায় কিংবা চায়ের দোকান সর্বত্র প্রধান আলোচনার বিষয়—ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। সাধারণত বিশ্বকাপের মৌসুমে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ দুটি নিয়ে বাংলাদেশের সমর্থকেরা মেতে ওঠেন। এদিকে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা নিয়মিতই মেসি-নেইমারের দেশে পণ্য রপ্তানি করেন।

ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা উভয় দেশেই বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আর্জেন্টিনার চেয়ে ব্রাজিল অনেক অনেক এগিয়ে। এবার খুলেই বলা যাক, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে আর্জেন্টিনার চেয়ে ব্রাজিলে সাড়ে ১১ গুণ বেশি পণ্য রপ্তানি করেছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে আর্জেন্টিনায় ৯৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর ব্রাজিলে রপ্তানি হয়েছে ১০ কোটি ৯২ লাখ ডলারের পণ্য, যা এর আগের বছরের চেয়ে ২৪ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে যেমন পণ্য রপ্তানি হয়, তেমনি সে দেশ থেকে আর্জেন্টিনার চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে, সেগুলোর মধ্যে পরিমাণের দিক থেকে ব্রাজিলের অবস্থান সপ্তম। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্রাজিল থেকে ২৪০ কোটি ডলারের ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার টন পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় প্রায় একই ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়—ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, জুতা, বাচ্চাদের খেলনা, ম্যাট্রেস, চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি। তবে উভয় দেশে পণ্য রপ্তানির সিংহভাগই তৈরি পোশাক।

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্যানুযায়ী, করোনার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্রাজিলে ১০ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। পরের বছর সেটি কমে সাত কোটিতে দাঁড়ায়। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে নেইমারদের দেশে।

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বড় বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডা। এর বাইরে শীর্ষ ১৫ অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল। চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশটিতে ২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ২৪০ কোটি টাকা। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক যুগ আগেও ব্রাজিলে খুব কম পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হতো। রপ্তানি বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১০ সালে আমরা বিজিএমইএ থেকে ব্রাজিলে গিয়ে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করি। তার পর থেকে ধীরে ধীরে রপ্তানি বেড়েছে। এখন সেটি আমাদের তৈরি পোশাকের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় বাজার।’

শহিদউল্লাহ আজিম আরও বলেন, ‘ব্রাজিলসহ লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশের যেসব কারখানা শীতের পোশাক তৈরি করে, তারা উপকৃত হয়েছে। বর্তমানে কারখানাগুলো সারা বছরই ক্রয়াদেশ পাচ্ছে।’

সর্বশেষ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সে হিসাবে ব্রাজিলে ১০ কোটি ৯২ লাখ ও আর্জেন্টিনায় ৯৫ লাখ ডলারের রপ্তানি খুবই নগণ্য। তারপরও অপ্রচলিত বাজারে পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন রপ্তানিকারকেরা।