ব্র্যাক ব্যাংক
ব্র্যাক ব্যাংক

দেড় হাজার কোটি টাকার মুনাফার ক্লাবে ব্র্যাক ব্যাংক

চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসেই দেড় হাজার কোটি টাকার মুনাফার ক্লাবে নাম লেখাল বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর—এই ৯ মাসে ব্যাংকটির সম্মিলিত মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকায়। ২০২৪ সালে পুরো বছর শেষে ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসের মুনাফা গত বছরকে ছাড়িয়ে গেছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংকটির মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫২৪ কোটি টাকা বা ৫২ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংক মুনাফা করেছিল ১ হাজার ১১ কোটি টাকা; বছর শেষে যা বেড়ে হয়েছিল ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা।

ব্র্যাক ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই প্রথম বছরের ৯ মাসেই ব্যাংকটির মুনাফা দেড় হাজার কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়েছে। দেশের দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মুনাফা। গত বছর শেষেও দেশীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা করেছিল ব্র্যাক ব্যাংক।

জানতে চাইলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তারেক রেফাত উল্লাহ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বছরের প্রথম ৯ মাসেই আমাদের মুনাফা দেড় হাজার কোটি টাকার মাইলফলক ছাড়িয়েছে। এটি দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড। ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা, পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন বা ইনোভেশন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার উদ্যোগ আমাদের এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। ব্যাংক খাতে অনেকগুলো ব্যাংকের অবস্থা যখন খারাপ, তখন ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংকের আমানতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে; যার সুফল মুনাফায়ও পড়েছে।’

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংকটি ঋণের বিপরীতে সুদ আয় করেছে ৫ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। তার বিপরীতে আমানতের সুদবাবদ ব্যয় করেছে ৪ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটি ঋণের সুদবাবদ আয় করেছিল ৪ হাজার ১৮০ কোটি টাকা; যার বিপরীতে আমানতের সুদবাবদ ব্যয় ছিল ২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির ঋণের সুদ আয় বেড়েছে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা। তার বিপরীতে আমানতের সুদ ব্যয় বেড়েছে ১ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। ঋণের সুদ আয়ের চেয়ে আমানতের সুদ ব্যয় বৃদ্ধির পরও সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির মুনাফায় বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা বা আয়। এ বছরের প্রথম ৯ মাসে এই খাত থেকে ব্যাংকটি আয় করেছে ৩ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ থেকে ব্যাংকটির আয় বেড়েছে ১ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা বেড়েছে। বিনিয়োগ থেকে ব্যাংক যে আয় করে, তার বিপরীতে খরচ তুলনামূলক কম। এ কারণে বিনিয়োগ আয় যে ব্যাংকের যত বেশি, সেই ব্যাংকের মুনাফাও তত বেশি।