Thank you for trying Sticky AMP!!

হিনডেনবার্গে রক্তাক্ত আদানি এবার কিনে নিলেন ইসরায়েলের বন্দর

আদানি সাম্রাজ্যের কর্নধার গৌতম আদানি

হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের জেরে এশিয়া ও ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি জেরবার হলেও তাঁর সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ থেমে নেই। গত সাত দিনে তাঁর আদানি গোষ্ঠীর বাজার মূলধন প্রায় ৭০ বিলিয়ন বা ৭ হাজার কোটি ডলার কমেছে। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলের এক বন্দর কিনে নিলেন এশিয়া ও ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় একটি ল্যাবরেটরিও স্থাপন করবেন গৌতম আদানি। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজপরিবারের মালিকানাধীন এক কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজের সেই বহুল আলোচিত এফপিওতে ৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

এ বন্দরের নাম হাইফা। বন্দরের আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীসহ ভারতের শীর্ষ রাজনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আদানি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারি আছে—এলবিট সিস্টেম, ইসরায়েল উইপন সিস্টেম ও ইসরায়েল ইনোভেশন অথরিটি তার মধ্যে অন্যতম। এসব ক্ষেত্রে ভারত ও ইসরায়েল একসঙ্গে পথ চলছে। একত্রে শিখন হচ্ছে। এ ছাড়া তেল আবিবে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা ল্যাব স্থাপন করা হবে, তা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাকেন্দ্রের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করবে।

গত বছর আদানি গোষ্ঠী ১১৫ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইসরায়েলের হাইফা বন্দর অধিগ্রহণের ঘোষণা দেয়। এ ক্ষেত্রে তাদের স্থানীয় সহযোগী গ্যাডট নামের একটি কোম্পানি। তবে এ দুর্যোগের সময়ও যে তিনি বন্দর অধিগ্রহণ থেকে পিছিয়ে আসেননি, ঘটনা হিসেবে তা উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ইসরায়েল প্রযুক্তিতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ। গৌতম আদানিও তা জানেন, সে জন্য বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমরা হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইসরায়েলের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই। এ দেশের যে গভীর প্রযুক্তিগত জ্ঞান, আমরা তা কাজে লাগাতে চাই।’

এদিকে ফোর্বসের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজপরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানি (আইএইচসি) আদানি গোষ্ঠীর সেই বহুল আলোচিত আদানি এন্টারপ্রাইজের এফপিওতে ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

আদানি এন্টারপ্রাইজের ২৫০ কোটি ডলারের এফপিওর জন্য আবুধাবির এই বিনিয়োগ অনেকটা আরব সাগর থেকে বয়ে আসা শীতল হাওয়ার মতো। এই এফপিও বাজারে আসার দুদিন আগে হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, আদানি গোষ্ঠী জালিয়াতি করে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে গত কয়েক বছরে বিপুল সম্পদ বানিয়েছে। প্রতিবেদনের জেরে আদানি গোষ্ঠীর সব শেয়ারের দাম পড়ে যায়। এ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার কোটি ডলারের বাজার মূলধন কমেছে তাদের। সেই সঙ্গে মুখ থুবড়ে পড়ে আদানি এন্টারপ্রাইজের এফপিও। প্রথম দুই দিনে মাত্র ১ শতাংশ শেয়ার বিক্রি হয়। ফলে এখন আবুধাবির রাজপরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানির এই বিনিয়োগ এই এফপিওর প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়াবে বলেই ধারণা করা যায়।

তবে আদানি গোষ্ঠীতে এটাই আইএইচসির প্রথম বিনিয়োগ নয়। গত বছরের এপ্রিলে তারা আদানি গোষ্ঠীতে ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে।

আইএএইচসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ বাশার শোয়েব এ বিনিয়োগ সম্পর্কে ফোর্বস ম্যাগাজিনকে বলেছেন, ‘আদানি গোষ্ঠীর মৌল ভিত্তির কারণে আমরা বিনিয়োগ করেছি, তাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমরা মনে করি, দীর্ঘ মেয়াদে আদানি গোষ্ঠীর বড় সম্ভাবনা আছে, যা আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মূল্য সংযোজন করবে।’

হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ফোর্বসের ধনীদের তালিকায় গৌতম আদানির স্থান ছিল চতুর্থ। এরপর তাঁর আদানি গোষ্ঠীর বাজার মূলধন কমতে শুরু করলে তিনি অষ্টম স্থানে নেমে যান। আজ সকালেও তিনি সেখানে আছেন। তবে গত এক দিনে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদ মূল্য বেড়েছে ৯৩ কোটি ১০ লাখ ডলার।