ভারতকে তেল খাতে বিনিয়োগের আহ্বান রাশিয়ার
ইউক্রেন আক্রমণের জেরে রাশিয়ার ওপরে বিভিন্ন আর্থিক অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের দেশগুলো। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর এত বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি রাশিয়া। এ অবস্থায় তেল ও গ্যাস বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার চেষ্টা করছে মস্কো। তারা নিজ দেশের তেল ও গ্যাস খাতে ভারতকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে।
সংকটকালে রাশিয়ার এই আগ্রহ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু পশ্চিম দুনিয়া যখন রাশিয়ার ওপরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে চলেছে, তখন ভারতের পক্ষে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা কতটা নিরাপদ হবে, সে ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ভারতের ওয়াকিবহাল মহল। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। দুই পক্ষের দফায় দফায় বৈঠকে আশার বার্তা পাওয়া গেলেও বাস্তবে পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। উল্টো এই সময়ের মধ্যে দফায় দফায় রাশিয়ার ওপরে বিভিন্ন আর্থিক অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশ।
চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটেন জানায়, এ বছরের শেষ দিকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি একদম বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারীর ওপরে এ ধরনের অবরোধ চাপানোর অনিবার্য ফলাফল হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত করা। সে ক্ষেত্রে অপরিশোধিত তেলের দাম আরও বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছাতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে বিনিয়োগ আহ্বান করে ভারতের তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে বার্তা দিলেন রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্দার নোভাক। ভারতের রুশ দূতাবাসের জারি করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘ভারতে রাশিয়ার তেল ও পেট্রোপণ্যের রপ্তানি ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই অঙ্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। আমরা আমাদের তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে ভারতের আরও বিনিয়োগ পেতে আগ্রহী। আর ভারতে আমাদের পণ্য বিক্রির অবকাঠামোও সম্প্রসারণে ইচ্ছুক।’
পশ্চিমের দেশগুলো রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানালেও এখন পর্যন্ত দিল্লি সে পথে হাঁটেনি। তারা শুধু আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে। দিল্লির এ অবস্থান কতটা সুবিবেচনাপ্রসূত এবং এর ফল কী দাঁড়াবে, সে বিষয়ে ভারতের ওয়াকিবহাল মহল ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু করেছে।
উল্টো দিকে রাশিয়ার ওপর আর্থিক অবরোধের গেরো শক্ত হতেই দিল্লিকে তেলের দামে ছাড় দেওয়ার টোপ দিয়েছে মস্কো। বাস্তবতা হচ্ছে, তেলের দাম এখন আরও বাড়ানো হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পিছিয়ে যাবে। ফলে তেলের দামে ছাড় দেওয়ার এই টোপ ভারতের মতো দেশের পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন। কারণ, তারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক।
তবে ভূরাজনৈতিক কারণে ভারতের পক্ষে এই ডাকে কতটা সাড়া দেওয়া সম্ভব, তা এখনই বলা যাবে না বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের।
আরও পড়ুন
-
মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার
-
বিশ্বের সেরা এয়ারলাইনস আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দিচ্ছে
-
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ভেন্যুতে ঝড় বয়ে গেছে