
দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে চীন ধীরে ধীরে বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন; কিন্তু এ কথার সঙ্গে চীনের প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে ভুল করেছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘তাদের কিছু সমস্যা আছে। বিষয়টা ভালো নয়; কারণ খারাপ মানুষের যখন সমস্যা থাকে, তখন তারা খারাপ কাজ করে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে এক রাজনৈতিক চাঁদা সংগ্রহাভিযানে তিনি এসব কথা বলেছেন। খবর রয়টার্সের।
জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, তিনি চীনকে আহত করতে চান না এবং তাদের সঙ্গে যৌক্তিক সম্পর্ক থাকুক, সেটাও তিনি চান। কিন্তু তিনি মনে করেন, চীনের ভবিষ্যৎ খারাপ। তিনি আরও বলেন, ‘চীনের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে...দেশটি সমস্যায় পড়েছে। একসময় চীনের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮; এখন তাদের প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে।’
এখানেই ভুল করেছেন বাইডেন। চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ; দ্বিতীয় প্রান্তিকে হয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এটা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেওয়া হিসাব; ঠিক আগের প্রান্তিকের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে বাইডেনের এই ভুল তথ্য উপস্থাপনের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এটাই প্রথম নয়, বাইডেন এর আগেও এমন পরিসংখ্যানগত ভুল করেছেন। চলতি বছরের জুন মাসে আরেক রাজনৈতিক চাঁদা সংগ্রহাভিযানে বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে ‘একনায়ক’ আখ্যা দিয়েছিলেন। তখন অবশ্য চীন নিশ্চুপ থাকেনি, বিষয়টিকে উসকানি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল তারা।
তবে মাত্র কয়েক দিন আগেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বেইজিং সফর করেন। ১৯৭৯ সালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বেইজিং মনে করছে, দুই দেশের সম্পর্ক গত ৪৪ বছরে এতটা খারাপ আর কখনো ছিল না, এখন যতটা।
এদিকে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রযুক্তি খাতের কিছু স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে মার্কিন কোম্পানিগুলোর চীনে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করেছেন। মূলত কম্পিউটার চিপ নির্মাণের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। প্রযুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিষয়ে সরকারকে আগেভাগে জানাতে হবে।
বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের ভালো প্রবৃদ্ধি হলেও সময়টা ভালো যাচ্ছে না দেশটির। জুলাই মাসে দেশটিতে নেতিবাচক মূল্যস্ফীতি হয়েছে; যদিও বিশ্বের অধিকাংশ দেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে দিতে জেরাবার হয়ে যাচ্ছে। তাতে দেশটিতে মন্দার আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে।