Thank you for trying Sticky AMP!!

৪১তম বিসিএস শেষ হতে যে কারণে সাড়ে চার বছর লাগছে

আরও একটি বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হতে যাচ্ছে। আগামী মাসে ৪১তম বিসিএসের ক্যাডারদের যোগদানের তারিখ ঠিক করা আছে। এই বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হতে লেগে গেল সাড়ে চার বছরের কিছু বেশি সময়। বিসিএস-প্রত্যাশীদের দাবি, এই সময় কমিয়ে আনা হোক। দ্রুত শেষ করা হোক নিয়োগ কার্যক্রম। এদিকে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, এক বছরেই বিসিএস শেষ করার কাজ নিয়ে এগোচ্ছে তারা। কিন্তু এতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে আবেদন করেন ৪ লাখের বেশি প্রার্থী। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২১ হাজার ৫৬ জন উত্তীর্ণ হন। তাঁরা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৩ হাজার জন। এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তাঁদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। ২০২৩ সালের ২৬ জুন শেষ হয় ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা। এরপর গত ৬ আগস্ট ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে পিএসসি। ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ৫২০ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

২১ মার্চ ৪১তম বিসিএসে ২ হাজার ৪৫৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই বিসিএসে নিয়োগ দিতে সরকারি কর্ম কমিশন ২ হাজার ৫২০ জনের নাম সুপারিশ করেছিল। সেখান থেকে প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়েছেন ৬৭ জন। সব মিলিয়ে বিজ্ঞপ্তি শুরুর দিন আর প্রজ্ঞাপনের দিনের সঙ্গে যোগদানের দিন ঠিক করা হয়েছে আগামী ২৮ এপ্রিল। হিসাব করলে দেখা যায়, ৪১তম বিসিএসের সব কার্যক্রম শেষ হতে লেগে যাচ্ছে সাড়ে চার বছর।

কেন হচ্ছে এমন, তা জানতে চাইলে পিএসসির একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখায়। এমনিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষক খাতা দেখেন। তাতে একটি বড় সময় চলে যায়। আবার সেই খাতা দেখা হলে তা পরীক্ষা করা হয়। সেই খাতা আবার ২০ শতাংশ বা এর অধিক নম্বরের পার্থক্য হলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। সেখানেও বেশ সময় যায়। ৪১তম বিসিএসে ১০ হাজারের বেশি খাতা তৃতীয় পরীক্ষক দেখেছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে সেই খাতা দেখা শেষ হয়। এরপর প্রায় সাত মাস ধরে নেওয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা। পরে দুই মাস পর হয় চূড়ান্ত ফল। পিএসসি সুপারিশের পর আবার আট মাস পর চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন। সাড়ে চার বছরের একটি সময়। আমরা চেষ্টা করছি। লিখিত পরীক্ষার খাতার দেখার চ্যালেঞ্জের কারণে পারছি না।’

পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনও বিসিএসে সময় কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বছরের শেষ দিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে আগামী এক বছরের মধ্যে বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।

Also Read: ১০ বছর পর নিয়োগের সুপারিশ পেলেন বিসিএস পরীক্ষার্থী

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৪১তম বিসিএসে যোগদান করতে যাওয়া একজন প্রার্থী বলছেন, ‘সাড়ে চার বছর অপেক্ষার পর বিসিএসের চূড়ান্ত ফল দেখা যাচ্ছে। এটি আমাদের হতাশ করছে। সাড়ে চার বছর আগে যখন বিসিএসের কার্যক্রম শুরু করেছিলাম, তখন কিছু বন্ধু বেসরকারি ব্যাংকে যোগ দিয়েছিলেন। আজ যখন আমাদের প্রজ্ঞাপন হলো, তখন আমরা ফ্রেশার আর তাঁরা সিনিয়র অফিসার বা আরও বড় পদে। বেতনও মোটা অঙ্কের। সব মিলে হতাশ লাগে। এই সময় কমিয়ে আনা গেলে আমাদের হতাশা কমে যেত।’

Also Read: ৪১তম বিসিএসে সুপারিশ পেলেও নিয়োগ পাননি ৬৭ জন

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক জনপ্রশাসন সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সময় কমিয়ে আনার গল্প না বলে আসলে কীভাবে যুক্তিসংগত করে কমানো যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। বাস্তববাদী হতে হবে পিএসসিকে। সরকারকেও আন্তরিক হতে হবে। তাহলে এই দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না।’

Also Read: বিসিএসের বাইরের চাকরিপ্রার্থীদের দুঃখ-বেদনা