
বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যাঁরা ১ম থেকে ১১তম নিবন্ধনে পাস করেছেন ও সনদ পেয়েছেন, তাঁদের অনেকে শিক্ষক নিয়োগের আবেদন করেছেন। কিন্তু সনদধারী প্রার্থীদের অনেকের বয়সে গরমিল থাকার প্রমাণ পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে—এমন কিছু সনদধারীর বয়সে গরমিল পাওয়া গেছে। সেগুলো এনটিআরসিএ যাচাই–বাছাই করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১ম থেকে ১১তম নিবন্ধনে পাস করা সনদধারী প্রার্থীরা চাকরির আবেদন করেছেন। তাঁদের অনেকের চাকরিতে আবেদনের বয়স পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এই বয়স নির্ণয়ের সফটওয়্যার এনটিআরসিএর কাছে নেই। তাই বিষয়টি আমাদের ম্যানুয়ালি করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা প্রমাণ পেয়েছি, অনেক সনদধারীর আবেদনের বয়স শেষ হয়েছে কিন্তু আবারও আবেদন করেছেন। এখন বেশি বয়সী প্রার্থীদের তালিকা করা হচ্ছে। তাঁদের বাদ দেওয়া হবে।’
এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানে যোগ্য ও মানসম্পন্ন ব্যক্তিগণকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন প্রদান করা হয়।
এনটিআরসিএ মূলত ২০০৫ সাল থেকে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিবন্ধন পরীক্ষার আয়োজন করে। এখন পর্যন্ত একটি বিশেষ পরীক্ষাসহ মোট ১৫টি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা হয়েছে। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা এনটিআরসিএ আয়োজন করে থাকলেও নিয়োগ চূড়ান্ত করত সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠলে ২০১৫ সাল থেকে এনটিআরসিএকে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
নীতিমালায় বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষক চাহিদা পাঠাবে এনটিআরসিএ–তে। সেখান থেকে নির্বাচিত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের তালিকা পাঠানো হবে প্রতিষ্ঠানে। সে তালিকা থেকেই শিক্ষক নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এখন শুধু শিক্ষকের নিয়োগপত্র জারি করবে।
এখন পর্যন্ত দুটি গণবিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে দুই দফায় শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে এনটিআরসিএ। এতে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে নিয়োগ পেয়েছেন প্রায় ৩৬ হাজার শিক্ষক। এখন তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি জারির অপেক্ষায় এনটিআরসিএ।
শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে প্রিলিমিনারি। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের দ্বিতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
পরবর্তী ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এরপর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে সব পরীক্ষায় পাস করার পর যাঁদের বয়স ৩৫ অতিক্রম করে না, তাঁরাই চাকরির যোগ্য বলে বিবেচিত হন।