Thank you for trying Sticky AMP!!

এসএসসি ২০২২ - ব্যবসায় উদ্যোগ | অধ্যায় ১ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১

সৃজনশীল প্রশ্ন

বর্তমানে ব্যবসায় শুধু পণ্যদ্রব্যের কেনাবেচার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ব্যবসায় যেকোনো দেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক তথা সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।

প্রশ্ন

ক. ব্যবসায় কী?

খ. ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করো।

গ. ব্যবসায়ের প্রকারভেদ চিহ্নিত করে তার বর্ণনা দাও।

. ‘বর্তমান বিশ্বে ব্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম’—কথাটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর

ক. মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত বৈধ সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যবসায় বলে।

. মুনাফার উদ্দেশ্য, আর্থিক মূল্য, ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা, সেবার মনোভাব, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রভৃতি ব্যবসায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

মূলত ব্যবসায়ের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগুলো অন্য সব পেশা থেকে একে আলাদা করেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত পণ্য বা সেবার অবশ্যই আর্থিক মূল্য থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এর সঙ্গে ঝুঁকির সম্পর্ক। তবে মুনাফা অর্জন ব্যবসায়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

গ. বর্তমানে ব্যবসায় শুধু পণ্যদ্রব্যের ক্রয়–বিক্রয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। পণ্যদ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন, পণ্যদ্রব্য বিনিময় ও এর সহায়ক কাজের সমষ্টিকে ব্যবসায় বলে।

আধুনিক ব্যবসায়কে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা ক. শিল্প খ. বাণিজ্য গ. প্রত্যক্ষ সেবা। শিল্পকে উৎপাদনের বাহন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে প্রক্রিয়ায় প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, কাঁচামালে রূপদান এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে কাঁচামালকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে পরিণত করা হয়, তাকে শিল্প বলা হয়।

আর বাণিজ্যকে ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবাসামগ্রী বণ্টনকারী শাখা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ব্যবসায় বা শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল উৎপাদকের নিকট পৌঁছানো কিংবা শিল্পে উৎপাদিত পণ্য বা সেবাসামগ্রী ভোক্তাদের নিকট পৌঁছানোর সব কার্যাবলিকে বাণিজ্য বলে।

তা ছাড়া অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত ডাক্তার, উকিল, প্রকৌশলী প্রভৃতি পেশাজীবীরা বিভিন্ন রকম সেবাকর্ম অর্থের বিনিময়ে প্রদান করে থাকেন। এসব সেবাকর্ম বা বৃত্তি প্রত্যক্ষ সেবা হিসেবে পরিচিত। যেমন ডাক্তারি ক্লিনিক, আইন চেম্বার, প্রকৌশলী ফার্ম, অডিট ফার্ম ইত্যাদি। প্রত্যক্ষ সেবা আধুনিক ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

ব্যবসায়কে তিন ভাগে (শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবা) ভাগ করা যায়। এদের মধ্যে শিল্পের মাধ্যমে ব্যবসায়ের উৎপাদনসংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করা এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যবসায়ের বণ্টনসংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করা হয়। তা ছাড়া প্রত্যক্ষ সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের সরাসরি সেবা প্রদান করা হয়।

ঘ. বর্তমান বিশ্বে ব্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। উক্তিটি যথার্থ। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যবসায় বলে। অর্থাৎ ব্যবসায় হতে হলে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যের পাশাপাশি ব্যবসায়ের আইনগত বৈধতাও থাকতে হবে। ব্যবসায়ের উৎপাদনসংক্রান্ত কাজ শিল্পের মাধ্যমে এবং বণ্টনসংক্রান্ত কাজ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

ব্যবসায় যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে দেশে নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপিত হয় এবং দেশে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে দেশের বেকার সমস্যার সমাধান হয় এবং জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ব্যবসায়ের অন্যতম একটা শাখা হচ্ছে বাণিজ্যের মাধ্যমে শিল্পে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তাদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া। এর ফলে ব্যবসায়ের মাধ্যমে গ্রাহকেরা প্রতিদিন নতুন নতুন পণ্য পেয়ে থাকেন। তাই বলা যায়, বর্তমান বিশ্বে ব্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

মো. আলতাফ হোসেন, প্রভাষক, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

এই অধ্যায়ের প্রকাশিত পূর্বের সৃজনশীল প্রশ্ন | পরবর্তী সৃজনশীল প্রশ্ন