Thank you for trying Sticky AMP!!

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে শিক্ষার্থীদের একটি প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সেভ দ্য চিলড্রেনের

কঙ্গো, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ আটটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ‘উচ্চ ঝুঁকি’তে। ইয়েমেন, বুরকিনা ফাসো, ভারত, ফিলিপাইন, বাংলাদেশসহ আরও ৪০টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে।
করোনার প্রকোপ কমায় আফ্রিকার মালাবিতে খুলেছে স্কুল

সম্প্রতি করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও দারিদ্র্যের মতো সমস্যাগুলোর তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের কোটি কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত। সংক্রমণের ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের কিছু অংশে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি চললেও পৃথিবীর এক–চতুর্থাংশ দেশেই শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার হুমকিতে রয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকা করেছে সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। কঙ্গো, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ আটটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ‘উচ্চ ঝুঁকি’তে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। ইয়েমেন, বুরকিনা ফাসো, ভারত, ফিলিপাইন, বাংলাদেশসহ আরও ৪০টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে বলেও জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

দারিদ্র্য, কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তসম্প্রদায় সহিংসতাসহ নানা সমস্যার কারণে এসব দেশে ‘শিক্ষার্থীদের একটি প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়া’র আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

গতকাল সোমবার সেভ দ্য চিলড্রেনের শিক্ষাবিষয়ক এক প্রতিবেদন বরাত দিয়ে এসব কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের কিছু দেশে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি চললেও পৃথিবীর এক–চতুর্থাংশ দেশেই শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার হুমকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, করোনাভাইরাস মহামারিতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রায় দেড় শ কোটি শিশু স্কুলবঞ্চিত হয়েছে। এদের মধ্য এক-তৃতীয়াংশের অনলাইন শিক্ষার সুযোগও নেই।

বুরকিনা ফাসোয় স্কুলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবিটি গত বছরের অক্টোবরের

সেভ দ্য চিলড্রেন যুক্তরাজ্যের প্রধান নির্বাহী গোয়েন হাইনস বলেন, ‘আমরা জানি, করোনায় স্কুল বন্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দরিদ্র শিশুরা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে শিশুদের শিক্ষা ও জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে মাত্র একটি হচ্ছে করোনাভাইরাস। আমাদের এ ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এখনই কাজ শুরু করতে হবে। কিন্তু বিষয়গুলো আগের মতো করাই এখন যথেষ্ট নয়। এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে “অগ্রগামী ও ভিন্নভাবে” সবকিছু গড়ে তুলতে হবে।’

জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের কারণে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দারিদ্র্য, কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তসম্প্রদায় সহিংসতাসহ নানা সমস্যার কারণে এসব দেশে ‘শিক্ষার্থীদের একটি প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়া’র আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

ইউনিসেফ বলেছে, এখন অবশ্য বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরছে। এরপর ১০ কোটির বেশি শিশু শিক্ষার্থী এখন সশরীরে ক্লাস করতে পারছে না।
এর আগে গত ১২ জুলাই ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজুল যৌথ বিবৃতিতে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে। লাখ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

হেনরিয়েটা ফোর ও অড্রে অ্যাজুল বলেন, আজ পর্যন্ত বিশ্বের ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এর কারণে ১৫ কোটি ৬০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা চলতে পারে না। বন্ধের ক্ষেত্রে স্কুলগুলো সবার শেষে এবং পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে সবার আগে থাকা উচিত। স্কুলগুলো পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যায় না। স্কুল খোলার জন্য করোনা শূন্যের কোঠায় যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা যায় না।

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সরকার ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। প্রথমে এইচএসসি, এসএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন হবে। আর অন্যদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাস হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে।

Also Read: স্কুল খুলতে আর অপেক্ষা নয়: ইউনিসেফ–ইউনেসকো

Also Read: এভাবে চলতে পারে না, স্কুল খুলে দিন

Also Read: স্কুল খুলে দেওয়ার আহ্বান ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালকের