সম্প্রতি মিরপুরের স্কলাস্টিকা সিনিয়র ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হলো স্কলাস্টিকা ইন্টারন্যাশনাল টেক সামিট ২০২৫ (এসটিএস ’২৫)। দুই দিনব্যাপী এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর।
প্রযুক্তি, গণিত, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা মনোভাবকে কেন্দ্র করে এই সামিটে অংশ নেন দেশি–বিদেশি অসংখ্য শিক্ষার্থী। এবারের সামিটে নেতৃত্ব দেন স্কলাস্টিকা প্রোগ্রামিং ক্লাবের সভাপতি ফারহীন এলমা চৌধুরী ও সহসভাপতি মোহাম্মদ সাফওয়ান রহমান। তাঁরা এই ইভেন্টের হেড অব সামিট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মোট ১১টি সেগমেন্টে অনুষ্ঠিত এই সামিটে ছিল হ্যাকাথন, নাম্বার থিওরি, টেক ট্রিভিয়া, রোবোটিকস, র্যাপিড রেন্ডার, কোড রেড, রিলে রেস, পিচ কম্পিটিশন, ইনোভেটরস অ্যারিনা, মোশন মাস্টারমাইন্ড ও সাসটেইনোভেট। প্রতিটি প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং, গণিত, সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধান ও উদ্যোক্তা দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ এনে দেয়। বিশেষ করে সাসটেইনোভেট সেগমেন্টে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব কেস স্টাডির ভিত্তিতে পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়নসংক্রান্ত সমস্যার প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান উপস্থাপন করেন।
শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন সাবমিশনভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোয়। যার মধ্যে ছিল ইনোভেটরস অ্যারিনা, মোশন মাস্টারমাইন্ড ও সাসটেইনোভেট। ফলে সামিট আন্তর্জাতিক মাত্রা লাভ করে।
দেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা স্কুল এই সামিটে অংশ নেয়। এর মধ্যে ছিল সাউথ ব্রিজ স্কুল (উত্তরা), সানিডেল, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়াল, মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুল (ইএসএস), স্কলাস্টিকা উত্তরা ক্যাম্পাস ও স্কলাস্টিকা মিরপুর ক্যাম্পাস। এ ছাড়া বেশ কিছু প্রাইভেট শিক্ষার্থী অংশ নেন। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সেগমেন্টে পুরস্কার অর্জন করে সামিটকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্কলাস্টিকার প্রিন্সিপাল ও হেড অব সেকশন নুরুন নাহার মজুমদার, যিনি এক অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তব্য প্রদানে শিক্ষার্থীদের আলোকিত করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন টেক একাডেমির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামস জাবের। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একটি উদ্বুদ্ধকারী বক্তব্য দেন এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
এ আয়োজনকে সফল করতে প্রোগ্রামিং ক্লাবের উপদেষ্টা তাহমিনা বেগম, ফাহিম ফেরদৌস ও মোহাম্মদ আবদুল কাদের জিলানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সামিটকে সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সহযোগী অংশীদার ছিল প্রথম আলো। আর্থিক পৃষ্ঠপোষক ছিল গ্রাসরুটস ইনিশিয়েটিভ। ই–লার্নিং পার্টনার ছিল ইন্টারঅ্যাকটিভ কেয়ারস। একাডেমিক পার্টনার হিসেবে সহায়তা করেছে ক্রিয়েটিভ জুনিয়রস। উপহার সহযোগী ছিল বিজ্ঞান বাক্স। খাদ্য ও নাশতার অংশীদার ছিল বার্গার এক্সপ্রেস, ওরেন্ডা এন বিনস ও পিৎজা অন টাইম। পানীয় সহযোগী হিসেবে ছিল ঠান্ডা গরম।
আয়োজকদের মতে, এসটিএস ’২৫ শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা, উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার এক অনন্য সুযোগ। বিজয়ীরা পদক, ক্রেস্ট ও সনদের পাশাপাশি তাঁদের উদ্ভাবনী কাজ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপনের স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
স্কলাস্টিকা ইন্টারন্যাশনাল টেক সামিট ২০২৫ প্রমাণ করেছে যে প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে একত্র করে শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা যায় এক অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, যা বাংলাদেশের শিক্ষাজগতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।