শৈশব থেকে গণিতের প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল আরিজ ইনতিশার চৌধুরীর। পাজল ও অঙ্কের বিভিন্ন ধাঁধা সমাধান করে সময় পার করে দিত আরিজ। এভাবে ছোটবেলা থেকে গণিতের প্রতি তার গভীর আগ্রহ তৈরি হয়। সে আগ্রহই আজ তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একের পর এক সাফল্য এনে দিচ্ছে।
আরিজ অনেক ছোট বয়স থেকেই নিয়মিত ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসবে অংশ নেয়। এ বছর ২৩তম অলিম্পিয়াডে প্রাথমিক ক্যাটাগরিতে সে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এরপর শুরু হয় তার আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের ধারা। চলতি বছরের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস ইনভাইটেশনাল (ডব্লিউএমআই) ২০২৫-এ গ্রেড–৫ ক্যাটাগরিতে সে স্বর্ণপদক জিতেছে। বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থী প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
ছেলের এমন সাফল্যে গর্বিত আরিজের মা সাইদা জাবিন আহমেদ ও বাবা আলম ইফতেখার চৌধুরী। তাঁরা বলেন, ‘আরিজ ছোটবেলা থেকে পাজল সমাধান করতে ভালোবাসে, আর এখন সে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের পতাকা উড়িয়েছে। গণিত আরিজের কাছে শুধু পড়াশোনা নয়; তার অনেক পছন্দের একটি বিষয়। আরিজের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এসব অর্জন আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।’
গত আগস্ট মাসে আরিজ ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত ভিয়েতনাম ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথমেটিকস কম্পিটিশন (ভিআইএমসি) ২০২৫-এ অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জপদক জিতেছে।
আরিজ রাজধানীর বেসরকারি গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাঁতারকুল শাখায় পড়াশোনা করে। স্কুলের গণিতের শিক্ষক ইসমাত জাহান শারমিন বলেন, ‘গণিতের প্রতি তার কৌতূহল আর উদ্দীপনা শ্রেণিকক্ষে নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। তার সাফল্য আমাদের গর্বিত করেছে। আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতেও তার এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে।’
আরিজের স্বপ্ন বিশ্বখ্যাত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করা এবং গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদান রাখা। নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে আরিজ বলে, ‘জাতীয় পতাকা হাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দাঁড়ানো এক অন্য রকম গর্বের অনুভূতি। মানুষের একাগ্র প্রচেষ্টায় যে সবই সম্ভব, ডব্লিউএমআইয়ে স্বর্ণ ও ভিআইএমসিতে ব্রোঞ্জ জয় করার পর তা আমি আরও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা শুরু করেছি। ভবিষ্যতেও এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’