ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন, দুই শিক্ষার্থী পেলেন চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মেক দ্য ডিফারেন্স’।

উৎসবমুখর ও জমকালো এবারের এই সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন ৩৪টি প্রোগ্রামের ২ হাজার ৫৫ শিক্ষার্থী। সমাবর্তনে দুই শিক্ষার্থীর হাতে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও ২৮ শিক্ষার্থীর হাতে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল তুলে দেওয়া হয়। ১৫টি স্নাতক প্রোগ্রাম থেকে ১ হাজার ৫৯২ জন, ১৬টি স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম থেকে ৪৩৭ জন ও তিনটি পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম থেকে ২৬ শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করেন। অনুষ্ঠানে ডিগ্রি পাওয়া শিক্ষার্থীরা ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।

সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল প্রদান করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শিক্ষার্থীদের ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল তুলে দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের উপাচার্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা অ্যাডাম হাবিব। তিনি বলেন, ‘আপনার ভবিষ্যৎ অন্য কেউ গড়ে দেবে না। নিজেকেই নিজের ভবিষ্যতের রূপকার হতে হবে। নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা থাকাই যথেষ্ট নয়; সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন নেতৃত্ব, প্রভাব ও কার্যকর সামর্থ্য। কারণ, সমাজে নানা শক্তি, স্বার্থ ও কাঠামো আছে, যারা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ভবিষ্যৎ তৈরি করতে চাইবে।’

চ্যান্সেলরের গোল্ড মেডেল পাওয়া রানা তাবাসসুম বলেন, সমাজে পরিবর্তন আনতে অনেক বেশি কিছু করার প্রয়োজন নেই; বরং ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেই বড় পরিবর্তনের সূচনা করা সম্ভব, আর সেই পরিবর্তনের শুরুটা মানুষকেই নিজে থেকে করতে হবে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মেক দ্য ডিফারেন্স’

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো, একে অপরকে বোঝা এবং যোগাযোগ তৈরি করা। অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যটি পড়ে শোনান সহ–উপাচার্য আরশাদ মাহমুদ চৌধুরী। তামারা হাসান আবেদ আরও বলেন, ‘আমরা সবাই যে পরিচয় খুঁজি, সেটা আমাদের একত্র হওয়ার অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত, বিভেদের কারণ নয়। আমার বাবা, যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, তিনি মারা যাওয়ার আগে বলেছিলেন, “আমি খুশি যে আমার জীবন বৃথা যায়নি। আমি আপনাদের সকলকে অনুরোধ করছি, এমন একটি পথ বেছে নিন, যাতে ভবিষ্যতে একদিন আপনিও বলতে পারেন যে আপনার জীবন বৃথা যায়নি।”’

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান শিক্ষার্থীদের রাজনীতিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে আমাদের স্মার্ট মানুষ দরকার, সৎ মানুষ দরকার। আপনারা রাজনীতিতে না এলে আমরা যে পরিবর্তনের কথা বলি, সেটা হওয়া সম্ভব নয়।’

উপাচার্য সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, ‘আমরা সবাই অনন্য। মানুষ হিসেবে আমাদের কাজ হলো সেই অনন্যতাকে মানুষের সেবায় ব্যবহার করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবর্তনকে কাজে লাগাতে হবে সমাজকে একতাবদ্ধ করতে এবং পুরো সমাজকে একসঙ্গে এগিয়ে নিতে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমানের বক্তব্যটি পাঠ করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অফিস অব কমিউনিকেশনসের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন সমাবর্তন কমিটির চেয়ার ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন সাদিয়া হামিদ কাজী। বিজ্ঞপ্তি