বাংলা: পরামর্শ
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় বাংলা বিষয়টি হবে প্রথমে। পরীক্ষার বরাদ্দ সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। মনে রেখো, বাংলায় ১৫টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। তোমাকে বুঝে যথাযথ উত্তর লেখতে হবে। মনে রেখো, ১৫০ মিনিটে তোমাকে ১৫টি প্রশ্নের উত্তর লেখতে হবে। অনেক প্রশ্নের উত্তর লেখতে হবে, তাই বুঝে তাড়াতাড়ি উত্তর লেখার চেষ্টা করতে হবে।
প্রশ্ন নম্বর–১
বাংলার প্রথম প্রশ্ন থাকবে কবি, কবিতার নামসহ কবিতার প্রথম ৮ পঙ্ক্তি লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ১০। নম্বরের ভাগ থাকবে ১+১+৮ করে। কবিতার নাম সঠিক লেখলে ১ নম্বর পাবে, কবির নাম লেখায় ১ নম্বর আর ৮ লাইন কবিতা লেখার জন্য পাবে ৮ নম্বর, প্রশ্নে যা যা চেয়েছে, তা সঠিকভাবে লেখলেই ভালো নম্বর পাবে। পাঠ্যবইয়ে ঠিক যেভাবে লিখছে, ঠিক সেভাবেই লেখবে। বিরামচিহ্নগুলো ভুল যে না হয়।
প্রশ্ন নম্বর–২
পরের প্রশ্নটি শব্দার্থ লেখ। নম্বর থাকবে ৫, উত্তর করতে হবে ৫টির। পুরো পাঠ্যবইয়ে অনেক শব্দার্থ আছে, সেসব শব্দার্থ থেকে প্রশ্ন থাকবে। নিচের নিয়মে তুমি লেখবে। যেমন: মনস্বী—উদারমনা।
প্রশ্ন নম্বর–৩
পরের প্রশ্ন হলো বাক্য গঠন করা নিয়ে। শব্দ দেওয়া থাকবে, সঠিকভাবে বাক্য গঠন করতে হবে। মোট ৫টি, নম্বর থাকবে ৫। তোমার গঠন করা বাক্য অবশ্যই অর্থপূর্ণ হতে হবে। যেমন: জোয়ার—নদীতে জোয়ার হয়।
প্রশ্ন নম্বর–৪
শূন্যস্থান পূরণ করো ৪ নম্বর প্রশ্নটি। ৫টি শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে। নম্বর থাকবে ৫। পাঠ্যবইয়ের শূন্যস্থানগুলো থেকেই থাকবে। তাই বইয়ের দেওয়া শূন্যস্থানগুলো ভালো করে পড়বে।
প্রশ্ন নম্বর–৫
পরীক্ষায় ৫ নম্বর প্রশ্নটি থাকবে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর লেখার ওপর। ৫টির উত্তর করতে হবে। নম্বর থাকবে ৫। পাঠ্যবইয়ে অনেক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর আছে, তা ভালো করে পড়বে। মনে রেখো, সঠিক হলেই পুরো নম্বর পাবে।
প্রশ্ন নম্বর–৬
বিপরীত শব্দ লেখ বা সমার্থক শব্দ লেখার ওপর প্রশ্ন থাকবে ৬ নম্বরে। প্রশ্ন আসতে পারে বিপরীত শব্দ লেখ বা সমার্থক শব্দ লেখার ওপর। উত্তর লেখতে হবে ৫টি প্রশ্নের। নম্বর থাকবে ৫। যেমন: বৈষম্য—সমতা।
প্রশ্ন নম্বর–৭
এ প্রশ্নের নম্বর হলো ৭। প্রশ্ন থাকবে সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন। আসবে পাঠ্যবইয়ের গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ থেকে। প্রশ্ন থাকবে ৪টি। নম্বর থাকবে ৮, যা চেয়েছে, তা ভালো করে বুঝে তারপর উত্তর লেখবে।
প্রশ্ন নম্বর–৮
বাংলার ৮ নম্বর প্রশ্নটি হবে বিস্তৃত উত্তর প্রশ্নের ওপর। এই প্রশ্নের উত্তর হবে বড়, নম্বর থাকবে ৫ করে। ৩টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রশ্নগুলো কিন্তু পাঠ্যবই থেকে থাকবে। বিস্তৃত উত্তর প্রশ্নের উত্তর কিন্তু বড় হবে। প্রশ্নে যা যা চেয়েছে, তা যথাযথভাবে লেখবে।
প্রশ্ন নম্বর–৯
৯ নম্বর প্রশ্ন হবে কবিতা বা গদ্য অনুচ্ছেদের মূলভাব লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ৫। কবিতা আসুক আর অনুচ্ছেদ পড়ে মূলভাব লেখাটার প্রশ্নটি আসুক, তোমার উত্তর ভালোভাবে পড়ে উত্তর লেখতে হবে।
প্রশ্ন নম্বর–১০
এ প্রশ্ন হবে ভাষারীতি পরিবর্তন বা পদ নির্ণয় ক্রিয়ার কাল নির্ণয়ের ওপর। প্রশ্নে যেকোনো একটির উত্তর করতে হবে। নম্বর থাকবে ৫। উত্তর করতে হবে বুঝেশুনে। প্রশ্নটা আগে ভালো করে পড়বে তারপর উত্তর লেখবে।
যেমন:
প্রশ্ন: হাতিও নদীতে নেমে পড়ল। (ভবিষ্যৎ)
উত্তর: হাতিও নদীতে নেমে পড়বে।
প্রশ্ন: বিশ্বজগৎ দেখেছি আমি। (ভবিষ্যৎ)
উত্তর: বিশ্বজগৎ দেখব আমি।
প্রশ্ন নম্বর–১১
১১ নম্বর প্রশ্ন থাকবে অনুচ্ছেদ পড়ে প্রশ্ন তৈরি করা বা অনুচ্ছেদে বিরামচিহ্ন প্রয়োগের ওপর। নম্বর থাকবে ৫। এ প্রশ্ন থাকবে পাঠ্যবই থেকে। তাই পাঠ্যবই ভালো করে পড়বে।
যেমন:
গ্রামের নাম আনন্দপুর। মামার বাড়ি। কথায় আছে, মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি। পড়া নেই, বাধা নেই, যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াও, যা খুশি খাও। এই তো মামার বাড়ি। গেল বছর পয়লা বৈশাখের ছুটিতে গিয়েছিলাম আনন্দপুর। সেখানে পয়লা বৈশাখে মেলা বসে। মামা বললেন, তোমাদের মেলা দেখাতে নিয়ে যাব। আমরা ছিলাম চারজন, আমি, মামাতো বোন বৃষ্টি, সোহানা আর ছোট ভাই তাজিন। মেলা বসে সকালে। মামা বেশ মজার মানুষ। কাঁধে ঝোলানো একটা ব্যাগ। তাতে থাকে ছবি আঁকার জিনিস। থাকে একটা বাঁশি। পড়েন ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে। মেলার একটু কাছে পৌঁছাতেই শুনতে পেলাম, নাগরদোলার ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ।
উত্তর
ক. মামার বাড়ি কোথায়?
খ. মামার কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে কী থাকে?
গ. ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউটে কে পড়েন?
ঘ. মেলার কাছে পৌঁছাতেই ওরা কী শুনতে পেল?
ঙ. আনন্দপুরে কখন মেলা বসে?
প্রশ্ন নম্বর–১২
পরের প্রশ্নটি থাকবে যুক্তবর্ণ বিভাজন ও শব্দ গঠনের ওপর। নম্বর থাকবে ৫। মনোযোগ সহকারে পড়বে। যুক্তবণে৴র বিভাজনগুলো ঠিকমতো করে নেবে। তারপর শব্দ গঠন করবে।
যেমন: ক্ষ = ক + ষ = বৃক্ষলতা।
প্রশ্ন নম্বর–১৩
এ প্রশ্ন হবে এককথায় প্রকাশের ওপর। নম্বর থাকবে ৫। প্রথমে ভালো করে পড়বে, পড়ে
উত্তর লেখবে।
যেমন: মাথা নত করে অভিবাদন করা — কুর্নিশ।
প্রশ্ন নম্বর–১৪
ফরম পূরণ করা বা আবেদনপত্র লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ৫। ফরম লেখায় কী কী তথ্য চেয়েছে, তা সঠিকভাবে লিখবে। আবেদনপত্র লেখার সময় যথাযথ নিয়মগুলো মেনে লিখবে। মনে রেখো, আবেদনপত্র লিখতে সময় বেশি বরাদ্দ রাখবে।
প্রশ্ন নম্বর–১৫
শেষ প্রশ্নটি থাকবে রচনা লেখার ওপর। রচনায় সূত্র দেওয়া থাকতে পারে আবার সূত্র দেওয়া না–ও থাকতে পারে। নম্বর থাকবে ১২। উত্তর বড় করে ভালো করে লিখবে। রচনা কীভাবে লেখবে, তা কিন্তু প্রশ্নে দেখে নেবে। প্রশ্নে যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই লেখবে।
খন্দকার আতিক, িশক্ষক
উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা