গণিত: পরামর্শ
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় গণিত বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার বরাদ্দ সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। মনে রেখো, গণিতে ১১টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।
জরুরি তথ্য
গণিতে ৪ থেকে ৯ ও ১১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে উত্তরপত্রে সমাধান করে দেখাতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী উল্লিখিত কোনো প্রশ্নের সমাধান না দেখিয়ে শুধু উত্তর লিখলে ওই প্রশ্নের উত্তরে কোনো নম্বর পাবে না।
প্রশ্ন নম্বর–১
গণিতের প্রথম প্রশ্নটিতে থাকবে ১০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন। নম্বর থাকবে ১০। চারটি বিকল্প উত্তর থেকে সঠিক উত্তরটি বেছে নিতে হবে। সঠিক উত্তরের নম্বরটি খাতায় লিখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে প্রশ্ন ভালোভাবে পড়বে। ছোট ছোট অঙ্কও করে নিতে হবে। সঠিক উত্তরটি বের করে নেবে।
যেমন: সাতটি সংখ্যার গড় ১৭২ হলে, সংখ্যাগুলোর যোগফল কত?
প্রশ্ন নম্বর–২
শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে ১০টি বাক্যের। এ ক্ষেত্রে পাঠ্যবইয়ের ভেতরের তথ্যগুলো বেশ সহায়ক হবে। শূন্যস্থান পূরণে পূর্ণ বাক্যটি লিখতে হয়। শূন্যস্থানের শব্দটির নিচে আন্ডারলাইন করে নিতে হয়।
যেমন: সামান্তরিকের কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমদ্বিখণ্ডিত করে।
প্রশ্ন নম্বর–৩
১৬টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছোট ছোট প্রশ্ন থাকবে। বিভিন্ন রাশির সংজ্ঞা থাকতে পারে। পাঠ্যবইয়ের ভেতরের তথ্যগুলো আয়ত্ত করলে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হবে। তবে সবকিছুরই স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।
যেমন: মৌলিক সংখ্যা কী?
২৫% কে সাধারণ ভগ্নাংশে প্রকাশ কর।
প্রশ্ন নম্বর–৪
চার প্রক্রিয়া–সম্পর্কিত সমস্যাবলি থেকে একটি প্রশ্ন থাকবে। এ ক্ষেত্রে বন্ধনী ব্যবহারের নিয়ম সঠিকভাবে জেনে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। ঐকিক নিয়মের সমস্যাগুলো সমাধান করার কৌশল জেনে নিতে হবে।
প্রশ্ন নম্বর–৫
লসাগু ও গসাগু নির্ণয়–সম্পর্কিত একটা প্রশ্ন থাকবে। গুণনীয়ক ও গুণিতক বের করার নিয়ম নিশ্চয় সবার জানা আছে।
প্রশ্ন নম্বর–৬
সাধারণ ভগ্নাংশ বা দশমিক ভগ্নাংশ থেকে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত, অপ্রকৃত ও মিশ্র ভগ্নাংশ শব্দগুলোর পরিচয় জেনে নিতে হবে। ভগ্নাংশের যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ কীভাবে করতে হয়, তা শুদ্ধ করে জেনে নেবে। যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ চিহ্নগুলো একই অঙ্কে থাকলে প্রথমে ভাগের কাজ, তারপর গুণ, তারপর যোগ ও বিয়োগের কাজ করতে হয়। দশমিক ভগ্নাংশের যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগের নিয়মগুলো স্পষ্টভাবে জেনে নিতে হবে।
প্রশ্ন নম্বর–৭
গড়–সম্পর্কিত একটি প্রশ্ন থাকবে। গড় দেওয়া থাকলে সমষ্টি কীভাবে নির্ণয় করতে হয় জানো তো?
প্রশ্ন নম্বর–৮
শতকরা থেকে একটি প্রশ্ন থাকবে। এ ধরনের গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে সূত্র ব্যবহার করা যায়। আবার ঐকিক নিয়মেও করা যায়। তোমার কাছে যে নিয়মটা সহজ মনে হবে, সে অনুযায়ী সমাধান করবে।
প্রশ্ন নম্বর–৯
পরিমাপ/সময়/(আয়ত/সামান্তরিক/ত্রিভুজ)-এর ক্ষেত্রফল পরিমাপ–সম্পর্কিত সমস্যা থেকে একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। দৈর্ঘ্য, ওজন ও আয়তন পরিমাপের এককগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কগুলো জানতেই হবে, তা না হলে এক ধরনের একক থেকে আরেক ধরনের এককে রূপান্তর করা যাবে না। আয়ত, সামান্তরিক, ত্রিভুজ ইত্যাদির ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য নির্দিষ্ট সূত্র আছে। এগুলো আয়ত্ত করতে হবে। এসব রাশির চিত্রগুলো আঁকার কৌশল জানতে হবে। এদের বৈশিষ্ট্যগুলো মাথায় রাখতে হবে।
সময়সংক্রান্ত গাণিতিক সমস্যাবলির সমাধানেও এক ধরনের একক থেকে আরেক ধরনের এককে রূপান্তর করার জন্য এককগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক ভালোভাবে জেনে রাখবে। কোন মাস কত দিনে হয়, অধিবর্ষ কত দিনের হয়, সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হবে।
প্রশ্ন নম্বর–১০
জ্যামিতিতে চতুর্ভুজ, আয়ত, বর্গ, সামান্তরিক, ট্রাপিজিয়াম, রম্বস, বৃত্ত ইত্যাদির সংজ্ঞা ও এদের বৈশিষ্ট্য পরিষ্কারভাবে জানতে হবে। বৃত্তের বিভিন্ন অংশ, যেমন পরিধি, কেন্দ্র, চাপ, জ্যা, ব্যাস, ব্যাসার্ধ ইত্যাদির পরিচয় জানো তো? সঠিক চিত্র আঁকার কৌশল রপ্ত করতে হবে। চিত্র আঁকতে পেনসিলের মাথা চিকন রাখতে হবে। চিত্র আঁকতে ভালো কম্পাস ব্যবহার করতে হবে। ভালো কম্পাস মানে দামি কম্পাস নয়। নড়বড়ে কম্পাস না হলেই হলো।
প্রশ্ন নম্বর–১১
উপাত্ত বিন্যস্তকরণ থেকে প্রশ্ন আসবে। সারণি তৈরি করার নিয়ম এত দিনে তোমাদের জানা হয়ে গেছে। আয়তলেখ আঁকার নিয়মও তোমাদের জানা আছে। তবে আঁকার সময় একটু যত্নশীল হতে হবে, এটা মনে রাখলেই চলবে।
মনে রাখবে, প্রতিটি প্রশ্নের মধ্যে ক, খ, গ ইত্যাদি অংশ থাকবে। মাথা ঠান্ডা রেখে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সুন্দরভাবে দেবে।
রমজান মাহমুদ, সিনিয়র শিক্ষক, গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল, ঢাকা