বিপিএটিসি স্কুলের এক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে
বিপিএটিসি স্কুলের এক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে

প্রাথমিক মেধা যাচাই পরীক্ষা

শেষ মুহূর্তের ১০টি পরামর্শ

প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় ভালো করতে তোমাদের জন্য রইল ১০টি শেষ মুহূতে৴র দরকারি পরামর্শ।

তোমার প্রস্তুতি, তোমার পরীক্ষা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর 

১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। এই পরীক্ষার  মাধ্যমেই বৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধা যাচাই পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমাদের সবার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে সব বিষয়ে ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। কোনো বিষয় দরকারি মনে হলে তা নোট খাতায় লিখে রাখবে, যেন পরীক্ষার আগে তাতে চোখ বুলিয়ে যেতে পারো। 

পরীক্ষায় সময় ম্যানেজমেন্ট

প্রাথমিক মেধা যাচাই পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের ওপর। তোমরা এরই মধ্যে সিলেবাস ও নম্বরবণ্টন পেয়েছ। সিলেবাস ও নম্বরবণ্টনের আলোকে প্রতিটি পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট অর্থাৎ ১৫০ মিনিটকে ভাগ করে নিয়ে টাইম ম্যানেজমেন্ট বা সময় বণ্টন করে নাও।

মনে রেখো, বাংলায় ১৫টি, ইংরেজিতে ১৩টি, গণিতে ১১ আর বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে মোট আটটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে।

প্রতিটি বিষয়ের উত্তর লেখার ধরন কিন্তু বিভিন্ন রকম। আর সিলেবাস নিয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর লিখতে কত সময় নেবে, তা পরীক্ষার আগেই ঠিক করে নাও। 

গুছিয়ে রাখো দরকারি জিনিস

প্রাথমিক মেধা যাচাই পরীক্ষার সময় যেসব দরকারি জিনিসপত্র লাগে, তা এখনই সংগ্রহ করে হাতের কাছে রাখো। পরে যেন তাড়াহুড়া না করতে হয়। জেনে নাও কী কী জিনিস কিনতে হবে, যেমন প্রবেশপত্র, কলম, পেনসিল, জ্যামিতি বক্স, কাটার, স্কেল, পরীক্ষার সময়সূচি ইত্যাদি আজই জোগাড় করে হাতের কাছে রাখবে। 

আগে লিখবে জানা উত্তর

প্রাথমিক মেধা যাচাই পরীক্ষা কিন্তু বেশ প্রতিযোগিতামূলক হবে। সেই প্রতিযোগিতায় তোমাকে ভালো করতে হবে। প্রতিটি পরীক্ষায় ভালোভাবে প্রশ্ন পড়বে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর বুঝে লিখবে। আগে দেখে নেবে কোন প্রশ্নগুলো ভালো পারো, আগে তার উত্তর লিখবে। তারপর মোটামুটি পারো, পরে বাকি প্রশ্নের উত্তর লিখবে। অনেক প্রশ্নই বহুনির্বাচনি বা ছোট উত্তর হয়, তাই আগেই বুঝে নাও কতটা উত্তর লিখবে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে লেখবে।

উত্তর লেখায় ধারাবাহিকতা রাখবে

সব প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় ধারাবাহিকতা রাখবে। এলোমেলোভাবে কোনো প্রশ্নের উত্তর লিখবে না; যাতে পরীক্ষকেরা ঠিকভাবে খাতার উত্তর পড়তে পারেন। ‘ক’ প্রশ্নের পর কখনো ‘ঘ’ প্রশ্নের উত্তর লিখবে না। ধারাবাহিকতার নিয়ম মেনে ‘ক’ প্রশ্নের পর ‘খ’ প্রশ্নের উত্তর লিখবে। এতে পরীক্ষক সহজেই কোন প্রশ্নের উত্তর করেছ, তা বুঝতে পারবেন।

খাতা রিভিশন কেন জরুরি?

পরীক্ষা শেষে তোমার খাতাটি জমা দেওয়ার পালা। খাতা রিভিশনের জন্য তুমি পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় আলাদাভাবে রাখবে। তোমার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, খাতা রিভিশন দেওয়া কেন জরুরি? এর উত্তর হলো, তাড়াতাড়ি লেখার সময় কোনো প্রশ্নের নম্বর, বানান, প্রশ্ন বাদ পড়া ইত্যাদি অনেক কিছু ঘটতে পারে। রিভিশন দিলে তা নজরে আসবে, সঙ্গে সঙ্গে তা ঠিক করে নিতে পারবে। 

উত্তর দাও ঠিক ঠিক 

প্রাথমিক মেধা যাচাই পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়ে এমন কিছু প্রশ্ন থাকবে, যা লিখলেই পুরো নম্বর পাবে। তাই এসব প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় সতর্ক থাকতে হবে। এসব প্রশ্নের বেলায় উত্তর ঠিক ঠিক লিখতে হবে। মনে রেখো, সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেই কিন্তু মোট নম্বর বেশি হবে। আর বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু মোট নম্বরের ওপর ভিত্তি করেই দেওয়া হয়।

বানান ভুল করবে না

পরীক্ষার খাতায় লেখার সময় হঠাৎই বানান ভুল হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি লেখার সময় এমন হতেই পারে। তাই আগে থেকেই প্রতিটি পরীক্ষায় বানান ভুল হওয়ার ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বানান ভুল হলে পরীক্ষকেরা বিরক্ত হন। তাই পড়ার সময় বানান ভালোভাবে দেখে পড়বে। তোমরা একটু সচেতন হলেই বানান ভুল হবে না।

অপ্রাসঙ্গিক কিছু লিখবে না

পরীক্ষার খাতা হলো একজন পরীক্ষার্থীর দলিল। সে কেমন লিখেছে, উত্তর কীভাবে সাজিয়েছে, খাতায় কতটা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নভাবে লিখেছে, সবই উঠে আসে তার খাতায়। প্রশ্নে চেয়েছে একটা আর উত্তর দিলে আরেকটা প্রশ্নের, এটা হলো না। পরীক্ষার খাতায় অপ্রাসঙ্গিক কোনো কিছু লিখবে না।

শরীর সুস্থ রাখার চেষ্টা করবে

এখন শীত পড়ছে। আবহাওয়াও পরিবর্তন হচ্ছে। কুয়াশা, ঠান্ডা পানিতে গোসল করা, শীতের কাপড় না পরলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সাবধানে থাকবে। শরীরের প্রতি খেয়াল রাখবে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাবে।

*মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা