Thank you for trying Sticky AMP!!

উপাচার্যের অনিয়ম তদন্তে রাবিতে যেতে পারে কমিটি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহান তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে (গতকাল বৃহস্পতিবার) মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে যে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন, তার তদন্তকাজ শুরু হচ্ছে আগামী রোববার থেকে। তদন্তকাজের জন্য কমিটি ঈদের আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।

এই ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মুহম্মদ আলমগীর আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে এ কথা বলেন।

চার সদস্যের এই কমিটির সদস্যরা হলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো.আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ এবং সদস্যসচিব ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান। গতকাল এই কমিটি করা হয়। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী রোববার প্রথম কর্মদিবস শুরু। এই কমিটি অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে।

কমিটি গঠনের আদেশে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ইতিমধ্যেই ইউজিসি তদন্ত করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিতও হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে উপাচার্যকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে উপাচার্য তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ করেছেন বলে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য তাঁর শেষ কর্মদিবসে বিভিন্ন পদে ১৪১ জনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে (এডহক) ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়ে গতকাল সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে ।

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলে দিয়েছে এই নিয়োগ অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত । সুতরাং তাঁদের কাজটি সহজ হবে । শুধু দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশ করবেন তাঁরা ।

বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহান ২০১৭ সালের মে মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই মেয়াদে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, নীতিমালা শিথিল করে এবং অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাঁর মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। উপাচার্যের বাসভবনে ওঠার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি বাসা দখলে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি করেন। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম করেছেন । ইউজিসির তদন্তেই এসব অভিযোগের সত্যতা মেলার পর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য গত ডিসেম্বর মাসে ১২টি পৃথক নোটিশ দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছিল মন্ত্রণালয়।

এর সামান্য কিছু ব্যবস্থা হলেও মোটাদাগে বড় অভিযোগগুলোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং শেষ দিনেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিয়োগ দিয়ে গেলেন তিনি। এ নিয়োগ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের সঙ্গে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

ইউজিসির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, যদি তদন্তের ভিত্তিতে আগেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো উপাচার্য শেষ দিনে এমন খারাপ নজির সৃষ্টির সুযোগ পেতেন না ।