জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (অন-ক্যাম্পাস) স্নাতক (সম্মান) কোর্স স্থগিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশের জবাব দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, ইউজিসির পত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের যেসব ধারা উল্লেখ করা হয়েছে সেটি আংশিক ও খণ্ডিত। তাঁদের ভাষ্য, মূল ক্যাম্পাসে স্নাতকে শিক্ষার্থী ভর্তির গৃহীত সিদ্ধান্ত আইনসংগত ও যথার্থ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁদের এই জবাবের কথা জানিয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ইউজিসি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স কোর্স স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে অন–ক্যাম্পাস স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ইউজিসি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বিধায় ইউজিসি এই নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে গত সোমবার ইউজিসির এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর এক দিন পর আজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের জবাব দিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৪১(১) ধারার তথ্য উল্লেখ করে বলেছে, এই আইন ও সংবিধির বিধান সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে স্নাতক–পূর্ব, স্নাতকোত্তর ও অন্যান্য পাঠক্রমে ছাত্র ভর্তির কাজ একাডেমিক কাউন্সিলের করা ভর্তি কমিটির প্রণয়ন করা বিধি দিয়ে পরিচালিত হবে। এ রকম আরও কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে জবাবে বলা হয়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির গৃহীত সিদ্ধান্ত আইনসংগত ও যথার্থ।’
জানতে চাইলে ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ইউজিসি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা একার কারও নয়। এখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে জবাব দিয়েছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় আড়াই হাজার কলেজে উচ্চশিক্ষা রয়েছে। এর মধ্যে ৮৮০টি কলেজে অনার্স বা স্নাতক চালু রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষক, অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণে ও ব্যবসায়িক মানসিকতা থেকে ঢালাওভাবে চালু করা হয়েছে স্নাতক (সম্মান) কোর্স। ফলে কাঙ্ক্ষিত মানসম্মত শিক্ষা দিতে পারছে না কলেজগুলো। অবশ্য নতুন করে আর কলেজগুলোতে স্নাতক (সম্মান) কোর্সের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।