
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় আগামী বছর তাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা বাড়াতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার। ২০২৬ সালের জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি বরাদ্দে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত আসনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অতিরিক্ত আসন বরাদ্দ পায়নি এই উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি।
অতিরিক্ত আসনের আবেদন বাতিলের কারণ
৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সব কটি বিশ্ববিদ্যালয় অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন চেয়েছিল সরকারের কাছে। কিন্তু সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার অভাব, অঞ্চলের প্রতি গভীর আগ্রহ ও সম্পৃক্ততার অভাব এবং নতুন শিক্ষার্থী আবাসনে যথাযথ বিনিয়োগের প্রমাণ না থাকায় সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে না।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতি মনোযোগকে অগ্রাধিকার
ফেডারেল আন্তর্জাতিক শিক্ষা সহকারী মন্ত্রী জুলিয়ান হিল বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থের অংশ। ২০২৬ সালের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আসন বরাদ্দে আমরা সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছি, যারা আমাদের অঞ্চলে সত্যিকারের মনোযোগ দিচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট কিরস্টেন অ্যান্ড্রুজ বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আরও বৈচিত্র্যময় শিক্ষার্থী সম্প্রদায় গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জানান, চীন থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই এখনো বেশি হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও আফ্রিকা থেকে শিক্ষার্থী বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী মিশ্রণে বৈচিত্র্য বাড়ানো যায়।’
ভিসা আবেদন কমেছে ২৬ শতাংশ
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট ভিসা আবেদন আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ কমেছে। ফেডারেল সরকার আগামী বছরের জন্য নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে ২ লাখ ৯৫ হাজার আসন বরাদ্দ করেছে। এর আগে বছরে ২ লাখ ৭০ হাজার আসনের সীমা নির্ধারণ করা ছিল। তবে অতিরিক্ত আসন না পেলেও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় ১১ হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে দেশজুড়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে শীর্ষে থাকবে। গত মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
নতুন আইন ও কঠোর নজরদারি
শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার ৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক শিক্ষা খাতের স্বচ্ছতা জোরদারের জন্য একটি বিল পেশ করেন। বিলে শিক্ষা এজেন্সির নতুন সংজ্ঞা যোগ করা হয়েছে এবং অনৈতিক বা অবৈধ অপারেটরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরীক্ষা ও শর্ত কঠোর করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষা খাত দ্রুত অর্থ কামাতে চাওয়া অসাধু ব্যক্তিদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা এই খাতে অনৈতিক কার্যকলাপ রুখতে নতুন আইন সংসদে এনেছি।’