দল বেঁধে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ১১তম গ্রেড দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। দাবি পূরণ না হলে সোমবার শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
দল বেঁধে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ১১তম গ্রেড দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। দাবি পূরণ না হলে সোমবার শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।

প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের হুমকি, আরেকাংশ পরীক্ষা নেবেন

সহকারী শিক্ষকদের বেতন ‘আপাতত’ ১১তম গ্রেড দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে। এই সংগঠনের এক নেতা মোহাম্মদ শাসছুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেছেন, আজ রোববারের মধ্যে দাবি পূরণের ব্যবস্থা না করা হলে আগামীকাল সোমবার শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবেন তাঁরা।

অবশ্য সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ বার্ষিক পরীক্ষা নেবেন। এই অংশ ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করেছেন। সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে এই অংশ আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে অপর অংশের দাবি ও কর্মসূচির প্রতি নৈতিক সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন ঐক্য পরিষদের এক নেতা।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূল বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে আগামীকাল ১ ডিসেম্বর।

সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।

বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে আছেন (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে সহকারী শিক্ষকেরা এ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান ও বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন।

আন্দোলন চলাকালেই অর্থ বিভাগের সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ওই বৈঠকের পর সরকার থেকে বলা হয়েছিল, সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি জাতীয় বেতন কমিশনে পাঠানো হয়েছে, যা বেতন কমিশনের বিবেচনাধীন। কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

আর শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। এ ছাড়া শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে। এরপর কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছিলেন শিক্ষকেরা। যদিও এর ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা নিয়ে শিক্ষকেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এখন আবার একাংশ কর্মবিরতি শুরু করেছেন।