Thank you for trying Sticky AMP!!

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাফসান নিজের সাফল্যে বিস্মিত

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাফসান জামান

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ততটা খুশি হতে পারেননি রাফসান জামান। তাই মন কিছুটা খারাপ ছিল। তবে তিনি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন, মেডিকেলে টিকবেন। সারা দেশের মধ্যে প্রথম হবেন, তা কিন্তু ভাবতে পারেননি। ফলে আজ রোববার পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর বিস্মিত হন রাফসান জামান।

চট্টগ্রামের হালিশহরে বেড়ে ওঠা রাফসান জামানের বাড়ি রংপুর জেলায়। জন্মের পরপর বাবা এ কে এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে পুরো পরিবার চট্টগ্রাম চলে আসে। শামসুজ্জামান সিটি গ্রুপ অব কোম্পানিজের উপমহাব্যবস্থাপক। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রাফসান ছোট। বড় বোন সাদীয়া ইবনে রাইসা এবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। রাফসানের সাফল্যে হালিশহরের কে ব্লকের বাসায় এখন ঈদের আনন্দ।

রাফসানের টেস্ট স্কোর ছিল ৯৪ দশমিক ২৫। মেরিট স্কোর ২৯৪ দশমিক ২৫। মেধাতালিকায় প্রথম হিসেবে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়ে রাফসান জামান বলেন, ‘আমি টিকব তা আশা করেছিলাম। কিন্তু এত ভালো ফল ভাবতে পারিনি। যখন সবাই ফোন করা শুরু করল, তখন খুব ভালো লাগছে।’

চট্টগ্রামে নিজেদের বাসায় বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে রাফসান জামান

ছোটবেলায় রাফসান চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলে পড়েছেন। এরপর সপ্তম শ্রেণিতে ক্যাডেট কলেজে সুযোগ পান। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে তিনি এসএসএসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এইচএসসির পর চট্টগ্রামের বাসায় এসে মেডিকেলের জন্য পড়ালেখা শুরু করেন। একটি কোচিং সেন্টারে কোচিংও করেছেন।

মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছেন রাফসান জামান। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন

এই সাফল্যের জন্য রাফসান বাবা–মা ও নিজের চেষ্টাকে কৃতিত্ব দিলেন। রাফসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। এরপর বাবা–মা অনেক কষ্ট করেছেন আমার জন্য। এরপর আমার নিজের চেষ্টা রয়েছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি করিনি।’

পরীক্ষার ফল বের হওয়ার পর থেকেই ফোন আর ফোন। বাসায় স্বজন ও গণমাধ্যমকর্মীরাও ভিড় করেন। তাঁর বাবা শামসুজ্জামান ও মা কাউসার নাজনীনও উচ্ছ্বসিত।

Also Read: মেডিকেলে পাসের হার ৩৫.৩৪, যেভাবে ফল পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

শামসুজ্জামান বলেন, ‘আমি তো পরীক্ষার ফল জানতাম না। কিন্তু দুপুরের পর থেকে একের পর এক ফোন আসছে। এরপর বাসায় চলে আসি। অনেক খুশি ছেলের সাফল্যে। যদিও পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ না হওয়ায় মন খারাপ ছিল। তবে সে এতটা ভালো করবে ভাবিনি। সে বইয়ের বাইরে পড়ালেখা করত। রেফারেন্স বই বেশি পড়ত। এবং একটা বিষয়ের শেষপর্যন্ত বোঝার চেষ্টা করত। অত বেশি পড়ত না। ১০টা-১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে যেত।’

রাফসান কখনো ঘড়ি ধরে পড়তেন না। তিনি কখনো ৬ ঘণ্টা, কখনো ৭ ঘণ্টা পড়তেন। নিয়মিত অধ্যবসায় এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা তাঁর এই সাফল্য এনেছে বলে মনে করছেন রাফসান। রাফসান বলেন, ‘আমি কখনো ঘড়ি ধরে পড়িনি। তবে সকাল ও বিকেলে নিয়ম করে পড়তাম। শুধু মেডিকেলের জন্য চেষ্টা করে গেছি।’

ভবিষ্যতে একজন ভালো ও মানবিক চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চান তিনি। পড়তে চান নিউরোসার্জারি নিয়ে। রাফসান বলেন, ‘একজন ডাক্তার হিসেবে মানুষের সেবা করতে চাই।’