বলিউডের সুন্দরী মা তাঁরা

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ ১১ মে পালিত হচ্ছে মা দিবস। বলিউডের অনেক জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রীই মা হওয়ার পর সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অভিনয় থেকে বিরতি টেনেছেন বা বিরতি শেষে আবার চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছেন। একটা সময়ে মনে করা হতো, বিয়ে মানেই কোনো অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার শেষ। আর সন্তান হলে তো কথাই নেই। কিন্তু বলিউডের অনেক অভিনেত্রীই এ ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করতে পেরেছেন। মা হওয়ার পরও নিজেদের সৌন্দর্যে এতটুকুও ভাটা পড়তে দেননি তাঁরা। তাঁদের দেখে মনেই হয় না, তাঁদের সন্তান আছে। এখনো তাঁদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে বলিউডে। দর্শক এখনো তাঁদের বড় পর্দায় দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন। মা দিবস উপলক্ষে এমন কয়েকজন তারকা অভিনেত্রীকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়ান ইন্ডিয়া। 

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের কোলে তাঁর একমাত্র মেয়ে আরাধ্য বচ্চন
ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের কোলে তাঁর একমাত্র মেয়ে আরাধ্য বচ্চন

ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
সাবেক বিশ্বসুন্দরী ও বলিউডের অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন মা হন ২০১১ সালের নভেম্বরে। একমাত্র মেয়ে আরাধ্যকে নিয়েই নিজস্ব জগত্ গড়ে তোলেন অ্যাশ। সব সময় মেয়ের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেন তিনি। মা হওয়ার পর মুটিয়ে যাওয়ায় অনেক সমালোচনা ও তির্যক মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছে বলিউডের প্রভাবশালী বচ্চন পরিবারের পুত্রবধূ ঐশ্বরিয়াকে। কিন্তু দমে যাননি তিনি। ২০১০ সালের পর আর বড় পর্দায় তাঁকে দেখা না গেলেও, বিজ্ঞাপনচিত্রসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গেছে। ঘর-সংসার সামলানোর পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরের ওজনও কমিয়েছেন তিনি। বলিউডে তাঁর প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন অগণিত ঐশ্বরিয়া ভক্ত। 

সেলিনা জেটলির কোলে তাঁর যমজ সন্তান ভিরাজ ও উইনস্টন

সেলিনা জেটলি
সাবেক মিস ইন্ডিয়া ও বলিউডের অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি ২০১১ সালে অস্ট্রেলীয় ব্যবসায়ী পিটার হাগকে বিয়ে করেন। পরের বছর যমজ সন্তান ভিরাজ ও উইনস্টনের জন্ম দেন ৩২ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী। সেলিনা অভিনীত সর্বশেষ ছবি ‘উইল ইউ ম্যারি মি?’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১২ সালে। এরপর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে। তবে সেলিনা ভক্তদের জন্য সুখবর হলো, শিগগির বলিউডে ফিরতে যাচ্ছেন আবেদনময়ী এ তারকা অভিনেত্রী। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তাঁর অভিনীত ‘কাশ তুমসে মোহাব্বত না হোতি’ ছবিটি। এ ছাড়া বিভিন্ন পণ্যের দূতিয়ালি ও ক্যাম্পেইন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর।

শ্রীদেবী

এক সময়ের পর্দা কাঁপানো বলিউডের অভিনেত্রী শ্রীদেবী যেন বয়সকে হার মানিয়েছেন। স্বামী চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুর এবং দুই মেয়ে জানভি ও খুশিকে নিয়ে সুখের সংসার তাঁর। আট বছর বিরতির পর ২০১২ সালে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে সফল প্রত্যাবর্তন ঘটে ৫০ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রীর। ছবিটির জন্য বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান তিনি। ৫০ বছর বয়সেও তারুণ্য ধরে রেখেছেন শ্রীদেবী। আজও বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড বা সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁর জমকালো উপস্থিতি নজর কাড়ে সবার।

জুহি চাওলা

শিল্পপতি জয় মেহতার সঙ্গে বিয়ের পর ২০০১ সালে প্রথম কন্যাসন্তান জানভির জন্ম দেন বলিউডের অভিনেত্রী জুহি চাওলা। দুই বছর পর জুহি-জয় দম্পতির ঘরে আসে ছেলে অর্জুন। মা হওয়ার পরও বলিউডে নিয়মিত অভিনয় চালিয়ে যান জুহি চাওলা। এ বছর মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ‘গুলাব গ্যাং’ ছবিটি। ‘গুলাব গ্যাং’ ছবিতে প্রথমবারের মতো নেতিবাচক চরিত্রে দেখা গেছে জুহিকে। জুহির নতুন এ রূপ ব্যাপক প্রশংসিতও হয়েছে দর্শক মহলে। অভিনয়ের পাশাপাশি সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন ৪৬ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।

ছেলে কিয়ান রাজ কাপুর ও মেয়ে সামায়রার সঙ্গে কারিশমা কাপুর

কারিশমা কাপুর
একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন বলিউডের প্রভাবশালী কাপুর পরিবারের মেয়ে কারিশমা কাপুর। বলিউডের অভিনেতা অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বাগদান ভেঙে যাওয়ার পর ২০০৩ সালে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরকে বিয়ে করেন কারিশমা। তাঁদের ঘরে আসে দুই সন্তান সামায়রা ও কিয়ান রাজ কাপুর। ২০১২ সালে সঞ্জয়ের সঙ্গে কারিশমার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সে বছরই ‘ডেঞ্জারাস ইশক’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে ফেরেন ৩৯ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী। ছবিটিতে নব্বই দশকের কারিশমাকেই যেন খুঁজে পান দর্শক। ছবিতে কারিশমার আকর্ষণীয় রূপ দেখে মুগ্ধ হন অগণিত দর্শক।

কাজল

‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ তারকা কাজল দুই সন্তানের মা। সন্তানদের দেখভালের জন্য অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও এখনো তাঁকে বড় পর্দায় দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন তাঁর অগণিত ভক্ত ও দর্শক।  সময়-সুযোগ বুঝে ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১০ সালে ‘মাই নেম ইজ খান’ এবং ‘উই আর ফ্যামিলি’ ছবিতে দেখা যায় কাজলকে। ৩৯ বছর বয়সে পা রাখলেও তাঁকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁর সৌন্দর্যও যেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।

দুই ছেলের সঙ্গে মাধুরী দীক্ষিত

মাধুরী দীক্ষিত
১৯৯৯ সালে চিকিত্সক শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত। তাঁদের দুই সন্তান অরিন ও রায়ান। দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটানোর পর ২০১১ সালে মাধুরী সপরিবারে মুম্বাই ফেরেন। মাধুরী দীক্ষিতের বয়স এখন ৪৫। কিন্তু তাঁকে দেখে কে বলবে জীবনের এতটা পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি! গত বছর ‘ইয়ে জাওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবির ‘ঘাগরা’ আইটেম গানে মাধুরীর অনবদ্য নাচ আর রূপ-লাবণ্যে মুগ্ধ হন অগণিত দর্শক। গানটির ব্যাপক সাফল্যের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুক্তি পায় মাধুরী অভিনীত ‘দেধ ইশকিয়া’ ছবিটি। দুই মাসের ব্যবধানে মুক্তি পায় মাধুরীর ‘গুলাব গ্যাং’ ছবিটি। এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও এখন দারুণ চাহিদা মাধুরীর।