Thank you for trying Sticky AMP!!

মোশাররফ করিম যাবেন না, কালাম পাবেন না

মোশাররফ করিম ও মো. কালাম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। সেদিন বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলছে অনুষ্ঠান আয়োজনের মহড়া। নির্ধারিত দর্শকদের কাছে পৌঁছে গেছে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র।

এবার বিতর্কের মুখে ২০১৭ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের ভারতীয় চিত্র সম্পাদক মো. কালাম। জানা গেছে, ‘শ্রেষ্ঠ চিত্র সম্পাদক’ ক্যাটাগরিতে নতুন কাউকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া ২০১৮ সালের চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা’ হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন মোশাররফ করিম।

গত ৭ নভেম্বর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে চলচ্চিত্রশিল্পে অবদানের জন্য ২৮টি বিভাগে বিশিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। পুরস্কার ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনে সাড়া পড়ে। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। প্রশ্ন ওঠে ভারতীয় একজন চলচ্চিত্র সম্পাদকের বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে। নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ভিনদেশি নাগরিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার কথা না। এ ছাড়া ‘শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা’ বিভাগে মোশাররফ করিমের পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘সেরা সম্পাদক’ হিসেবে কালামের নাম ঘোষণা করা হয়, যাঁর ভারতীয় পরিচয় ‘গোপন করে’ চলচ্চিত্র পুরস্কারের আবেদন করেছিলেন প্রযোজক। বিতর্কের মুখে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে জুরিবোর্ডের কাছে প্রযোজক সানী সানোয়ার চিঠি দেন। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে মো. কালামকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও চলচ্চিত্র বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিজান উল আলম। তিনি জানান, সেই ক্যাটাগরিতে নতুন কাউকে আর নেওয়া হয়নি। কারণ, পুরো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নতুন কাউকে নেওয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়। ২০১৭ সালের ‘শ্রেষ্ঠ চিত্র সম্পাদক’ ক্যাটাগরিতে তাই কাউকেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না।

পুরস্কার বাতিলের ঘটনা এবার প্রথম নয়; এর আগে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘নিয়তি’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হিসেবে হাবিবের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি সেই চলচ্চিত্রে কাজই করেননি। তখন হাবিবকে বাদ দেওয়া হয়। হাবিবের পরিবর্তে ‘শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক’ ক্যাটাগরিতে কাউকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, পুরস্কার ঘোষণার দুই দিন পর ‘শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বিবৃতি দেন মোশাররফ করিম। তখন তিনি বলেছেন, ‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রটি কমেডি বা কৌতুক চরিত্র নয়। এটি প্রধান চরিত্রগুলোর একটি। তিনি জুরিবোর্ডকে অনুরোধ করেছেন ‘শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা’ হিসেবে তাঁর নামটি প্রত্যাহার করে নিতে। তা না হলে তাঁর পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

‘কমলা রকেট’ চলচ্চিত্রে মোশাররফ করিম। ছবি: সংগৃহীত

আজ বৃহস্পতিবার মোশাররফ করিম প্রথম আলোকে জানান, তিনি তাঁর আগের সিদ্ধান্তে এখনো অটল। বললেন, ‘নতুন করে এ বিষয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না। বিষয়টি আমার জন্য বিব্রতকর।’

৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের পর তারকাদের অংশগ্রহণে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন চলচ্চিত্র তারকা ফেরদৌস ও পূর্ণিমা। জানা গেছে, এই অনুষ্ঠানে মো. খুরশীদ আলম গাইবেন ‘আলতো পায়ে ছন্দ তুলে’, সামিনা চৌধুরী গাইবেন ‘ভালোবাসা কী, তুমি বোঝো না’, মমতাজ গাইবেন ‘না জানি কোন অপরাধে’, নকীব খান গাইবেন ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’, ইমরান ও কনা গাইবেন ‘ওহে শ্যাম’ আর সাব্বির ও লিজা গাইবেন ‘তুমি সাত সাগরের ওপার হতে আমায় ডেকেছ’ গানগুলো। থাকবে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, ববি, মাহিয়া মাহি, নুসরাত ফারিয়া ও তমা মির্জার পরিবেশনা। দুটি দেশের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করবেন ওয়ার্দা রিহাব।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার হচ্ছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ১৯৭৫ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।