‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমায় কল্যাণী প্রিয়দর্শন।
‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমায় কল্যাণী প্রিয়দর্শন।

৩০ কোটি বাজেটে ২৮০ কোটি আয়, কোথায় গিয়ে থামবে ছবিটি

বক্স অফিসে ঝড়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ দর্শকের প্রশংসা আর সমালোচকদের ইতিবাচক রিভিউ—গত ২৮ আগস্ট মুক্তির পর থেকে এর সবই পেয়েছে মালয়ালম সিনেমা ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। মুক্তির ২৪ দিনে ছবিটি গড়ে নতুন রেকর্ড। এখানেই শেষ নয়, প্রায় এক মাস পরেও ছবিটির জয়যাত্রা অব্যাহত।

নতুন রেকর্ড
মালয়ালম সিনেমার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। কেবল ২৪ দিনেই ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ২৬৭ কোটি রুপি। এর মধ্য দিয়ে পৃথ্বিরাজ সুকুমারন পরিচালিত ‘এল টু: এম্পুরান’–কে টপকে গেল ছবিটি। আগে রেকর্ডটি ছিল ২৬৫ দশমিক ৫ কোটি রুপির। এটিই এখন মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে আয় করা সিনেমা। শুধু মালয়ালম নয়, দক্ষিণ ভারতের সব ভাষার চলচ্চিত্র মিলিয়েও নারীপ্রধান ছবির মধ্যে ‘লোকাহ’ই এখন সর্বোচ্চ আয়কারী।

গত বুধবার ছিল সিনেমাটি মুক্তির ২৮ দিন। এদিনও ৪৭ লাখ রুপি আয় করেছে সিনেমাটি। সব মিলিয়ে ভারতে আয় দাঁড়াল ১৪০ কোটি রুপিতে। মুক্তির পর থেকে বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই দক্ষিণি ছবির আয় ২৮০ কোটি রুপির বেশি। মাত্র ৩০ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমাটি চলতি বছর চমকে দিয়েছে।

‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমায় কল্যাণী প্রিয়দর্শন। আইএমডিবি

কী আছে ছবিতে
অভিনেতা দুলকার সালমান প্রযোজিত এই ফ্যান্টাসি ড্রামায় প্রধান চরিত্রে আছেন কল্যাণী প্রিয়দর্শন। আরও আছেন স্যান্ডি, অরুণ কুরিয়ান ও নাসলেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ডমিনিক অরুণ, ‘লোকাহ’র গল্পের সূত্র নেওয়া হয়েছে কেরালার লোককথার কিংবদন্তি চরিত্র ‘কল্লিয়ানকাট্টু নীলি’ থেকে। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন নাসলেন, স্যান্ডি মাস্টার, চন্দু সালিমকুমার ও অরুণ কুরিয়ান। বিশেষ চরিত্রে আছেন দুলকার নিজেও; অতিথি চরিত্রে আছেন টোভিনো থমাস। পরিচালক ডমিনিক অরুণ নিশ্চিত করেছেন, সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি ঘুরবে টোভিনো থমাসের চরিত্রকে কেন্দ্র করে। আর তৃতীয় কিস্তিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় দেখা যাবে দুলকার সালমানকে।

আপ্লুত কল্যাণী
এর আগে ‘হৃদয়ম’ সিনেমা দিয়ে আলোচনায় আসেন কল্যাণী; এবার ‘লোকাহ’ দিয়ে গড়লেন নতুন রেকর্ড। দর্শকের ভালোবাসা আর সমালোচকদের প্রশংসায় আপ্লুত অভিনেত্রী।

‘লোকা চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমায় কল্যাণী প্রিয়দর্শন। আইএমডিবি

‘ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। ছবির কাজ শুরু করার সময় তো আমরা ভাবিইনি এমন কিছু হবে। তখন শুধু মনে হয়েছিল একটা ভালো গল্প বলার মতো ছবির অংশ হব। কিন্তু মুক্তির পর দর্শক ছবিটিকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেলেন। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে বিষয়টা অবাস্তবই মনে হচ্ছে। মুক্তির প্রায় এক মাস পার হয়ে গেছে, কিন্তু কী বলব বুঝতে পারছি না—আমি এখনো বাকরুদ্ধ’, পিংকভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন অভিনেত্রী।

নিজের সঙ্গে সিনেমার চরিত্রের কথা মিল আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তরুণ এই অভিনেত্রী বলেন, ‘তাঁর শরীরী ভাষা, কথা বলার ধরন, পরিণত একধরনের গাম্ভীর্য—এসবই আমার ব্যক্তিত্ব থেকে একেবারেই আলাদা। এই জায়গাটাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। পরিচালক ডমিনিক আর নির্মাতা নিমিশ দীর্ঘদিন ধরে চরিত্রটির ভেতরে ছিলেন, তাঁরা জানতেন সে কীভাবে হাঁটে, খায়—সবকিছু। আমি পুরোপুরি তাঁদের দর্শনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলাম।’

‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমার পোস্টার। আইএমডিবি

অভিনেত্রী আরও বলেন এই সিনেমার চরিত্রটি তাঁর জন্য শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মতো নতুন কারও পক্ষে সহজ ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে নানা ট্রেনিং করেছি—স্ট্রেংথ ট্রেনিং, রোপ ট্রেনিং, হারনেস ট্রেনিং, মুয়াই থাই থেকে শুরু করে বক্সিং। একাধিক ধরনের কমব্যাট ট্রেনিং করতে হয়েছে মাসের পর মাস। অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার ইয়ানিক বেন প্রথমেই বলেছিলেন—যদি প্রথমবার ঘুষি মারো, সেটা দর্শক সহজেই বুঝে ফেলবে। তাই শরীরী ভাষা যেন স্বাভাবিক হয়ে যায়, সে জন্য অনেক অনুশীলন করেছি। অবশ্যই সিনেমার জাদুও আছে। একটা টিমওয়ার্ক, যেখানে আমি শুধু প্রাণপণ চেষ্টা করেছি, বাকিটা কারিগরি টিম সামলে নিয়েছে।’
কল্যাণীর আশা এই সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেবে।

তথ্যসূত্র: পিংকভিলা