মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন অর্জুন রামপাল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে পথ বদলে বলিউডে পা রাখেন তিনি। কিন্তু রুপালি পর্দায় উঠে আসার সেই পথ মোটেও সহজ ছিল না। মডেলিং ছাড়ার পর অভিনয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করতে গিয়ে তাঁকে পাড়ি দিতে হয়েছে কঠিন আর্থিক অনিশ্চয়তার সময়। আজ ২৬ নভেম্বর অভিনেতার ৫৩তম জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক সে গল্প।
পপ ডায়েরিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অর্জুন রামপাল জানান, যে ছবিটি দিয়ে তাঁর অভিনয়ে অভিষেক হওয়ার কথা ছিল, সেটির মুক্তি পেতে লেগে যায় প্রায় ছয় বছর। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর ছিল না কোনো নিশ্চিত আয়ের উৎস।
তখন অর্জুন রামপাল সফল এক মডেল, কিন্তু চিত্রগ্রাহক অশোক মেহতার পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘মোক্ষ’র প্রস্তাব পেয়ে দ্বিধা না করেই রাজি হয়ে যান। মনীষা কৈরালার বিপরীতে শুটিং শুরু হলেও ক্যামেরায় নিজের উপস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। মডেলিংয়ের অভ্যাসের কারণে তাঁর অঙ্গভঙ্গি, দেহভাষা—কিছুই তাঁকে অভিনেতার মতো মনে করাচ্ছিল না। তাই হঠাৎই সিদ্ধান্ত নেন পুরোপুরি মডেলিং ছেড়ে দিয়ে অভিনয়কে সময় দেওয়ার। কিন্তু তখন তিনি ভাবতেও পারেননি, কী সংগ্রাম অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য।
ছবিটি মুক্তি পেতে সময় লাগে ছয় বছর। এই দীর্ঘ সময়ে অর্জুনের হাতে কোনো কাজ বা আয়ের উৎস ছিল না। সে সময় তিনি সেভেন বাংলোজ এলাকায় থাকতেন। বাড়িভাড়াও ঠিকমতো দিতে পারতেন না। সেই কঠিন পরিস্থিতিতে বাড়িওয়ালা তাঁর পাশে দাঁড়ান। স্মৃতিচারণা করে অভিনেতা বলেন, ‘ওই সময়ে আমার আয়ের কোনো উৎস ছিল না। প্রতি মাসের এক তারিখে আমার বাড়িওয়ালা আসতেন, আর আমি তাঁর দিকে তাকাতাম। তিনি বলতেন, ‘‘টাকা নেই, তাই তো?’’ আমি মাথা নেড়ে “হ্যাঁ” বলতাম। তিনি বলতেন, ‘‘কিছু মনে কোরো না, তুমি ঠিক পরিশোধ করে দেবে।”’ অর্জুন বলেন, জীবনের এই ধরনের সহায়তা খুব দরকার।
অর্জুন জানান, একসময় ভাড়া দিতে না পারায় তাঁকে বাড়ি বদলাতে হয়। সেই সময় তাঁকে নিজে নিরামিষ খেয়েও দুটি কুকুরকে আমিষ খাবার খাওয়াতে হতো। এই অভিজ্ঞতাকে তিনি ‘দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে এ ঘটনাই তাঁকে জীবনে কৃতজ্ঞ হতে শিখিয়েছে বলে জানান অভিনেতা।
অর্জুন পরে সেই বাড়িওয়ালার সব টাকা শোধ করে দেন। বাড়ি পরিবর্তন করার পরও তিনি সেই উদার বাড়িওয়ালাকে তাঁর ছবির প্রিমিয়ারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া