দক্ষিণ ভারতের প্রায় সব ভাষায় কাজ করা অভিনেত্রী প্রিয়ামণি এখন বলিউডেও পরিচিত মুখ। ‘জওয়ান’, ‘আর্টিকেল ৩৭০’-এর পর অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর সিরিজ ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ তাঁকে এনে দিয়েছে সর্বভারতীয় জনপ্রিয়তা। রাজ-ডিকে পরিচালিত সিরিজটির তৃতীয় মৌসুম দিয়ে আবারও আলোচনায় তিনি। সম্প্রতি এক আড্ডায় কাজ আর শিল্পীজীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন অভিনেত্রী। মুম্বাইয়ের এক পাঁচ তারকা হোটেলে এই আড্ডায় প্রথম আলোর প্রতিনিধির সঙ্গে ছিলেন আরও দুজন সাংবাদিক।
দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি বলিউডে নিজের জায়গা এখন বেশ পোক্ত প্রিয়ামণির। সে সূত্রেই মুম্বাই এখন তাঁর কর্মজীবনের নতুন ঠিকানা। শৈশব কেটেছে বেঙ্গালুরুতে। দুই শহর নিয়ে তাঁর অনুভূতি, ‘প্রায় আট বছর ধরে মুম্বাইয়ে আছি। এখন শহরটা আপন মনে হয়। খাবার, আবহাওয়া, মানুষ—সবকিছুতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে আমার আলাদা আবেগ জড়িয়ে আছে। ওখানেই আমার বেড়ে ওঠা।’
দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রি ও বলিউডের কাজের ধরন নিয়ে তুলনার প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর মন্তব্য, ‘কাজের কাঠামো মোটামুটি একই। তবে সময় ব্যবস্থাপনায় পার্থক্য আছে। দক্ষিণে শৃঙ্খলা অনেক বেশি। আমরা খুব ভোরে কাজ শুরু করি। তামিল, তেলুগু, কন্নড়—সব জায়গাতেই ১২ ঘণ্টার শিফট স্বাভাবিক। মালয়ালম ছবিতে তো সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করাটাই নিয়ম।’
‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর মাধ্যমে প্রিয়ামণির পরিচিতি পৌঁছেছে ভারতের সর্বত্র। এ সাফল্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। বিভিন্ন ভাষায় নানা ধরনের চরিত্রে কাজ করেছি। কিন্তু ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ আমাকে যেভাবে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে, সেটা অন্য কোনো কাজ পারেনি। আগে মূলত দক্ষিণের দর্শকই আমাকে চিনতেন। হিন্দিভাষী দর্শক চিনতেন ডাব করা ছবির মাধ্যমে। ওটিটি আমাকে জাতীয় পরিসরে পরিচিত করেছে।’
প্রিয়ামণি যোগ করেন, ‘সুচিত্রা চরিত্রের জন্য আমাকে অডিশন দিতে হয়েছিল। প্রথম সিজনের সময় এত বড় সাড়া পাব, ভাবিনি। দ্বিতীয় সিজন তো আরও বড় হিট হয়। “জওয়ান” বা “আর্টিকেল” ৩৭০-এর মতো ছবিতে কাজ করলেও অনুরাগী বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওটিটি।’
এই সিরিজে মনোজ বাজপেয়ীর স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রিয়ামণি। তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘মনোজ স্যার অসাধারণ অভিনেতা। ওনার সঙ্গে অভিনয় করতে হলে পুরো প্রস্তুতি নিয়ে সেটে যেতে হয়। প্রতিটি শটে নতুন কিছু শেখা যায়। নিজের পরিশ্রমেই তিনি এ জায়গায় পৌঁছেছেন, এটা অনেক বড় প্রেরণার।’
ক্যারিয়ার ও প্রাপ্তি নিয়ে প্রিয়ামণির উপলব্ধি, ‘এই পেশায় রাতারাতি কিছু পাওয়া যায় না। পরিশ্রম, প্রত্যাখ্যান আর সংগ্রামের পথ পেরোতেই হয়। এখন ভিন্নধর্মী চরিত্রের প্রস্তাব পাচ্ছি, সেটাই সবচেয়ে আনন্দের। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমি এখন আমার প্রাপ্য পারিশ্রমিক পাচ্ছি। একজন শিল্পীর জন্য এটাই বড় তৃপ্তি।’