সম্প্রতি একটি খসড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ভারতের কর্ণাটক সরকার, যেখানে রাজ্যের সব ধরনের সিনেমা হলে টিকিটের সর্বোচ্চ মূল্য ২০০ রুপি নির্ধারণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ২০১৪ সালের কর্ণাটক সিনেমা (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালায় সংশোধন এনে এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, সব ভাষার সিনেমা ও সব ধরনের থিয়েটারের জন্য এই সীমা কার্যকর হবে। বিনোদন করসহ এই মূল্য নির্ধারিত হবে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, খসড়াটি এখন জনগণের মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে এবং ১৫ দিনের মধ্যে আপত্তি বা পরামর্শ জানানো যাবে। যদি এটি অনুমোদিত হয়, তাহলে ১ আগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে এটি কার্যকর হবে।
এ বিজ্ঞপ্তিতে সিনেমাপ্রেমীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। অনেক সিনেমাপ্রেমী এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, ‘অবশেষে সাধারণ কাজ হতে যাচ্ছে। এত দিন ছোট পর্দার হলগুলো ভক্তদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ৭০০ রুপি পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করছিল।’
তবে অনেকে মনে করছেন, মাল্টিপ্লেক্সগুলো অন্যভাবে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করবে। যেমন কেউ লিখেছেন, ‘টিকিট ২০০ রুপি হলে, পপকর্ন ২ হাজার রুপি আর পানির বোতল ৫০০ রুপি হবে!’
এই প্রস্তাবে সবচেয়ে বেশি খুশি কন্নড় সুপারস্টার যশের ভক্তরা। অনেকে মনে করছেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে যশ অভিনীত ‘কেজিএফ চ্যাপটার ২’–এর প্রথম দিনের বক্স অফিস রেকর্ড সম্ভবত চিরকাল অধরাই থেকে যাবে। কারণ, আগে ‘ইএমএস’ (আর্লি মর্নিং শো) এবং উচ্চমূল্যের টিকিট বিক্রি করলেও এটি বাস্তবায়ন হলে সেই সুযোগ আর থাকবে না। একজন এক্স ব্যবহারকারী লেখেন, ‘টিকিটের দাম ২০০ রুপি হলে এবং ইএমএস না থাকলে, কেজিএফ ২-এর রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারবে না।’
তবে সিনেমা–বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই নিয়ম কার্যকর হলে ভবিষ্যতের বড় বাজেটের সিনেমার নির্মাণে সংকট তৈরি হবে। এই নতুন সীমা কার্যকর হলে, ‘টক্সিক’, ‘কানতারা চ্যাপটার ১’ কিংবা ‘পুষ্পা: দ্য রুল’–এর মতো বড় বাজেটের সিনেমার আয় প্রভাবিত হবে। বিশেষ করে মুক্তির প্রথম দিনে অধিক আয় করার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যেতে পারে।
সরকারের এই পদক্ষেপ সাধারণ দর্শকের জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও, বড় বাজেটের সিনেমাগুলোর নির্মাতারা এবং হলমালিকদের জন্য এটি এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এখন দেখার বিষয়, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে কার্যকর হয় কি না।