মাত্র ১৪০ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত আদিত্য ধরের সিনেমা ‘ধুরন্ধর’ বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৬০০ কোটি রুপির বেশি। এই সাফল্য কি একে ২০২৫ সালের সবচেয়ে সফল ভারতীয় ছবি বানানোর জন্য যথেষ্ট? বিশ্লেষণ করা যাক।
রণবীর সিং অভিনীত ‘ধুরন্ধর’ যেন গোটা ভারতকেই ঝাঁকুনি দিয়ে দিয়েছে। মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহেও ছবিটি বক্স অফিসে রেকর্ড গড়েই চলেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন সংগ্রহের নজির তৈরি হচ্ছে, আর টিকিট কাউন্টারে ছবিটির ধরে রাখার ক্ষমতা (হোল্ড) নজিরবিহীন। এর ফলেই মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই ছবিটি ৬০০ কোটি রুপির গণ্ডি পেরিয়ে গেছে। এমনকি সপ্তাহের কর্মদিবসগুলোতেও আয় তেমন কমেনি।
তবে প্রশ্ন হলো এই সাফল্য কি ‘ধুরন্ধর’কে ভারতের ২০২৫ সালের সবচেয়ে বড় হিট বানিয়ে দিয়েছে?
‘ধুরন্ধর’-এর বক্স অফিস সংগ্রহ
প্রথম সপ্তাহ শেষে বিশ্বব্যাপী ৩১৯ কোটি রুপি আয় করে ‘ধুরন্ধর’। দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে ছবিটি যেন নতুন গতি পায়। খুব সহজেই ৪০০ কোটি ও ৫০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করে। মুক্তির ১২ দিনের মাথায় ছবিটির মোট বিশ্বব্যাপী আয় দাঁড়ায় ৬৩৯ কোটি রুপি।
এর ফলে ২০২৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় ছবিগুলোর মধ্যে এটি এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী ছবি। এর ওপরে রয়েছে বছরের অন্য দুই মেগা ব্লকবাস্টার—‘কানতারা: চ্যাপ্টার ওয়ান’ (৮৫১ কোটি রুপি), ‘ছাবা’ (৮০৮ কোটি রুপি)।
‘ধুরন্ধর’ কি ‘ছাবা’ ও ‘কানতারা’র চেয়েও এগিয়ে?
লাভের হিসাবে ‘ধুরন্ধর’ ইতিমধ্যেই বেশ ভালো জায়গায় রয়েছে। ছবিটির নিট আয় প্রায় ৫০০ কোটি রুপি। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছবিটির প্রথম পর্বের বাজেট ছিল প্রায় ১৪০ কোটি রুপি। সে হিসেবে ছবিটি ইতিমধ্যেই ২৫০ থেকে ২৬০ শতাংশ লাভ করে ফেলেছে।
তবে এই সূচকে এখনো ‘ছাবা’ ও ‘কানতারা: চ্যাপ্টার ওয়ান’ এগিয়ে রয়েছে। ‘ছাবা’র বাজেট ১২৫ কোটি রুপি, নিট আয় প্রায় ৬৫০ কোটি রুপি; লাভ প্রায় ৪২০ শতাংশ। অন্যদিকে ‘কানতারা: চ্যাপ্টার ওয়ান’–এর বাজেট ১৫০ কোটি রুপি, নিট আয় প্রায় ৬৮০ কোটি রুপি; লাভ প্রায় ৩৫০ শতাংশ।
এই দুই ছবিকে ছাপিয়ে যেতে হলে ‘ধুরন্ধর’কে নিট আয় করতে হবে ৭২৫ কোটির বেশি, যার অর্থ বিশ্বব্যাপী মোট আয় ৯৫০ কোটি রুপির ওপর যেতে হবে।
চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষকদের ধারণা, ছবিটি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতেও পারে। এমনকি আয় এক হাজার কোটি রুপির গণ্ডি ছুঁয়ে ফেললেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। যদি তা হয়, তাহলে বড় বাজেটের ছবিগুলোর মধ্যে ‘ধুরন্ধর’ নিঃসন্দেহে ২০২৫ সালের সবচেয়ে বড় হিটে পরিণত হবে।
যে ছবিকে কোনোভাবেই হারাতে পারবে না ‘ধুরন্ধর’
তবে একটি বিষয় খেয়াল করার মতো, ‘ধুরন্ধর’ কেবল ‘বড় মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো’র মধ্যেই বছরের সবচেয়ে বড় হিট হতে পারে। কারণ, ২০২৫ সালের সবচেয়ে লাভজনক ভারতীয় ছবির তকমা ইতিমধ্যেই চলে গেছে এক অপ্রত্যাশিত ছবির ঝুলিতে।
গুজরাটি ভাষার ছোট বাজেটের ছবি ‘লালো–কৃষ্ণ সদা সহায়তে’ তৈরি হয়েছিল মাত্র ৫০ লাখ রুপি বাজেটে। অথচ ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে অবিশ্বাস্য ১১১ কোটি রুপি। এর নিট আয় ৮৫ কোটির বেশি, অর্থাৎ লাভ প্রায় ১৭,০০০ শতাংশ!
এই লাভের অঙ্ক এতটাই বিশাল যে, ‘ধুরন্ধর’কে এই রেকর্ড ভাঙতে হলে আয় করতে হতো প্রায় ২৪ হাজার কোটি রুপি, যা ‘টাইটানিক’ কিংবা ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর থেকেও বেশি।
‘ধুরন্ধর’ সম্পর্কে
আদিত্য ধর পরিচালিত এই স্পাই থ্রিলারে রণবীর সিং অভিনয় করেছেন হামজা চরিত্রে—একজন ভারতীয় গোয়েন্দা, যিনি করাচির অপরাধী চক্র ও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করেন।
ছবিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অক্ষয় খান্না, অর্জুন রামপাল, সঞ্জয় দত্ত ও আর মাধবন।
হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে