
বলিউডের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকাটা শিল্পা শেঠি আর তাঁর স্বামী রাজ কুন্দ্রার জন্য নতুন কিছু নয়। কাজের চেয়েও বেশি সময় তাঁরা শিরোনামে আসেন বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগের কারণে। ঠিক এমনই এক প্রেক্ষাপটে, কিছুদিন আগেই আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এই দম্পতি। আর এবার, ব্যক্তিগতভাবে একটি সংবাদের মাধ্যমে নতুন নজর কাড়লেন শিল্পা—নিজের হাতে তাঁর প্রিয় রেস্তোরাঁ ‘বাস্তিয়ান’-এর দরজায় তালা লাগানোর খবরটি প্রকাশ করেছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার ইনস্টাগ্রামে পোস্টের মাধ্যমে শিল্পা তাঁর ভক্ত ও অনুসারীদের চমকে দিয়েছেন। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তিনি লিখেছেন, ‘বৃহস্পতিবার এক যুগের সমাপ্তি ঘটছে। আমরা মুম্বাইয়ের সবচেয়ে আইকনিক ঠিকানাগুলোর একটি “বাস্তিয়ান বান্দ্রা”-কে বিদায় জানাচ্ছি। এই ঠিকানার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অসংখ্য সোনালি স্মৃতি, অজস্র অবিস্মরণীয় রাত এবং যা শহরের নৈশপ্রমোদকে নতুন রূপ দিয়েছে। রাতের প্রাণকেন্দ্রটি চিরবিদায় জানানোর আগে শেষ প্রণাম জানাচ্ছে। এই বৃহস্পতিবার আমরা “বাস্তিয়ান”–এ শেষবারের মতো এক বিশেষ সময় কাটাব। সব কাছের মানুষকে নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে একটি সৃজনশীল সন্ধ্যা, যেখানে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন হবে এবং “বাস্তিয়ান”–কে ঘিরে ছোট ছোট মুহূর্ত শেষবারের মতো উদ্যাপন করা হবে।’
২০১৬ সালে শিল্পা শেঠি ও ব্যবসায়ী রঞ্জিত বিন্দ্রার যৌথ উদ্যোগে বান্দ্রায় খোলা ‘বাস্তিয়ান’ অতি দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ‘শিল্পার রেস্তোরাঁ’ হিসেবে পরিচিত এই স্থান সি-ফুডপ্রেমীদের অন্যতম আকর্ষণীয় ঠিকানা হয়ে উঠেছিল। চোখধাঁধানো সজ্জা, সৃজনশীল মেন্যু ও শহরের নৈশজীবনের সঙ্গে মিলিয়ে এক স্বতন্ত্র অভিজ্ঞতা দিতো এটি।
তবে এই রেস্তোরাঁর সাফল্যের পেছনে দম্পতির ব্যক্তিগত জীবনও কম আলোচিত নয়। রাজ কুন্দ্রা ও শিল্পা শেঠি বিভিন্ন সময় বিতর্কে জড়িয়েছেন।
সম্প্রতি তাঁদের বিরুদ্ধে ৬০ কোটি রুপি আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠে। মুম্বাইয়ের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, তিনি বেস্ট ডিল টিভি প্রাইভেট লিমিটেডে (যা বর্তমানে বন্ধ) ৬০ কোটি রুপির বিনিয়োগ করেছিলেন, যা শিল্পা ও রাজ আত্মসাৎ করেছেন। এই অভিযোগ ইতিমধ্যে এফআইআরে নথিভুক্ত হয়েছে। এর আগেও দম্পতির বিরুদ্ধে এমন আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি, রাজ কুন্দ্রা পর্নছবি নির্মাণের কারণে জেলও ভোগ করেছেন।
শিল্পা ও রাজের এই বিবেচনাপ্রসূত বিতর্কিত জীবনশৈলী এবং তাঁদের ব্যবসায়িক উদ্যোগ—সবই সমানভাবে মিডিয়ার নজর কাড়ে। আর ‘বাস্তিয়ান’-এর শেষ দিনও যেন এই যুগের একটি সমাপ্তি চিহ্নিত করছে—একদিকে চমকপ্রদ স্মৃতি, অন্যদিকে বিতর্ক ও অরাজকতার ছাপ।