ছবি মুক্তির আগেই কিশোর অভিনেতার মৃত্যু

মাত্র ১৫ বছর বয়সেই অভিনয়জগতে যাত্রা শুরু করেছিল ভারতের গুজরাটের রাহুল কোলি। আর প্রথম ছবি ‘ছেল্লো শো’ ইংরেজিতে ‘দ্য লাস্ট ফিল্ম’ মনোনীত হয়েছে ভারত থেকে অস্কারে যাওয়ার জন্য। এর চেয়ে ভালো শুরু আর কী হতে পারে। কিন্তু এই যাত্রা যে প্রথম ছবিতেই থমকে গেছে। অস্কারে যাওয়া নয়, ছবি মুক্তিও দেখে যেতে পারেনি রাহুল। কারণ, মরণব্যাধি ক্যানসার যে তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

রাহুল কোলি
রাহুল কোলি

আহমেদাবাদের একটি হাসপাতালে মারা যায় রাহুল কোলি। ভারতীয় সংবাদ সূত্রে চিকিৎসকেরা জানান, লিউকেমিয়া ক্যানসারে আক্রান্ত ছিল রাহুল। চার মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিল। রাহুলের বাবা রামু কোলি পেশায় একজন অটোচালক। তিনি জানান, সকালে নাশতা করার পর রাহুলের জ্বর আসে। এ সময় রাহুল কয়েকবার রক্তবমিও করে। এরপর সে মারা যায়। গতকাল রাহুলের পরিবার তার জন্মস্থান গুজরাটের হাপা গ্রামে তার জন্য প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে।

রাহুল কোলি

‘ছেল্লো শো’ ছবিটি ১৪ অক্টোবর মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এই ছবিতে ছয়জন শিশুশিল্পী অভিনয় করেছে, তাদের মধ্যে রাহুল একজন। সে প্রধান চরিত্র সময়ের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছে। ছবি নিয়ে রাহুল খুবই উচ্ছ্বসিত ছিল। রাহুল প্রায়ই তার বাবাকে বলত, এই ছবি মুক্তির পর তাদের জীবন বদলে যাবে। রামু কোলি বলেন, ‘আমরা পুরো পরিবার ছবি মুক্তির দিন একসঙ্গে এই ছবি দেখব। কারণ, ছেলে যে এই ছবিতেই আছে।’

তিন ভাইবোনের মধ্যে রাহুল সবার বড়। তাদের পরিবার ছিল খুবই দরিদ্র। কিন্তু রাহুলের স্বপ্ন তাদেরও স্বপ্ন। রাহুলের চিকিৎসার জন্য তার বাবা আয়ের একমাত্র উৎস অটোরিকশাটিও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তবে এই ছবির কলাকুশলী এটি জানতে পেরে তাঁর অটোরিকশাটি ফিরিয়ে এনেছিলেন।

আগামী বছর ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে একাডেমি পুরস্কার অস্কারের ৯৫তম আসর। ২০২৩ সালের এই আয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে ভারত থেকে প্রতিযোগিতা করবে প্যান নলিন পরিচালিত ‘ছেল্লো শো’ ছবিটি। ছবির পরিচালক প্যান নলিন বলেন, ‘তার মৃত্যুর সংবাদ সিনেমা-সংশ্লিষ্ট আমাদের সবার জন্যই দুঃখজনক। আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরে তার দেখাশোনা করছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো গেল না।’

গুজরাটের একটি ছোট গ্রামের গল্প তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। যেখানে বেড়ে উঠেছেন নলিন। এই সিনেমার মূল চরিত্রে আছে একজন ৯ বছরের কিশোর, যার নাম সময়। সময়ের বাবা ট্রেনের যাত্রীদের কাছে চা বিক্রি করে। সময় নিজেও চা বিক্রি করে। সেই ট্রেনের পাশ দিয়েই বয়ে যায় যেন সময়ের স্রোত। রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে সময়ের সময় চলে যায়। এভাবে সে একসময় সিনেমার প্রেমে পড়ে যায়। নিয়মিত সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গিয়েই নানা ঘটনা ঘটে। সেই গল্পই ‘ছেল্লো শো’।