
২০১৭ সালের বহুল আলোচিত অভিনেত্রী অপহরণ ও যৌন নির্যাতন মামলার রায় ঘোষণা করলেন এর্নাকুলামের প্রিন্সিপাল জেলা ও দায়রা আদালত। দীর্ঘ ৯ বছরের প্রতীক্ষার পর আদালত প্রধান অভিযুক্ত পালসার সুনিসহ মোট ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তবে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মালয়ালম অভিনেতা দিলীপ। বিচারক হানি এম ভার্গিস আজ সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত জানান, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অষ্টম অভিযুক্ত দিলীপকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সুনীল কুমার ওরফে পালসার সুনি, মার্টিন অ্যান্টনি, মাণিকন্দন বি, ভিজিশ ভিপি, সেলিম এইচ ও প্রদীপ—এই ছয়জনকে দোষী ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, অপহরণ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রসহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দোষী ব্যক্তিদের সাজা ঘোষণা করা হবে ১২ ডিসেম্বর।
২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, কেরালার কোচিতে এক শীর্ষস্থানীয় মালয়ালম অভিনেত্রীর গাড়ির মধ্যেই প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার তদন্ত ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক, আইনি ও চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম বিতর্কিত অধ্যায়। তদন্তে উঠে আসে যে এটি শুধু একটি অপরাধ নয়, বরং অভিনেত্রীকে অপমান ও ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পিত আক্রমণ। সেখানে নাম আসে দিলীপের, তবে আদালত বলেছেন, প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণের মতো যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
বিচার প্রক্রিয়ায় ২৬১ জন সাক্ষীকে জেরা করা হয়, গৃহীত হয় ৮৩৪টি নথি। তদন্তকারী অফিসারকে একাই জেরা করা হয়েছে ১০৯ দিন ধরে। সেই দীর্ঘ প্রক্রিয়াতেই আজ আদালতের চূড়ান্ত রায়, তবে রায়ের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেরালা সরকার ও নির্যাতিতা অভিনেত্রী। কেরালার আইনমন্ত্রী পি রাজীব জানিয়েছেন, তাঁরা দ্রুতই উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তাঁর ভাষায়, নির্যাতিতা এখনো ‘সম্পূর্ণ বিচার’ পাননি।
বিবিসি অবলম্বনে