চট্টগ্রামের সার্সন রোডে হঠাৎ ছাত্র-জনতার মিছিল। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত রাজপথ। তাঁদের মুখে ‘গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘আমার ভাই মরল কেন? জবাব চাই/ দিতে হবে’, ‘জেল-জুলুম হুলিয়া/ নিতে হবে তুলিয়া’। একদিকে অগ্নিঝরা স্লোগানে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা, অন্যদিকে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের প্রবল গুলিবর্ষণ। তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দু-তিনজন।
না। এসব ঘটনা মোটেও আজ কিংবা গতকালের নয়। এ ঘটনা প্রায় ৩৩ বছর আগের। তবে পুরোনো সে স্মৃতি ফিরে এসেছে পঙ্কজ পালিত পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘একটি না বলা গল্প’-এ । ওই দৃশ্যের প্রেক্ষাপটে ১৯৮৮ সাল। তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সে বছরের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ছিল। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারবিরোধী মিছিল নিয়ে জনসভায় পৌঁছে যায়। সভা শেষ হওয়ার আগেই বাধে বিপত্তি। পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি ছোড়ে। কালো রাস্তার পিচ রক্তে লাল হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজন মারা যান। তাঁদের মধ্যে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানও ছিলেন। ইতিহাসে ঘটনাটি ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা’ হিসেবে পরিচিত। এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামে এমন আরও নানা দৃশ্যের শুটিং চলেছে। ইতিমধ্যে এ ছবির ৬০ শতাংশ শুটিং শেষ হয়েছে।
গল্পটি দারুণ। গল্পে চমক আছে, আছে আবেগও। তাই কাজ করে পুরো টিমই আনন্দিত। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।পঙ্কজ পালিত,পরিচালক
প্রায় ৩৩ বছর পর ঘটনাটি আবার সামনে এনেছেন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তাঁর গল্প নিয়েই মূলত সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন পঙ্কজ পালিত। ছবিতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সন্তানকে সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিসূত্রে উঠে আসে ১৯৭১। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত এ গল্পের পরতে পরতে রয়েছে উত্তেজনা, যা দর্শককে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবে। শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন অভিনয়শিল্পী রওনক হাসান ও রুনা খান। চলচ্চিত্রে রওনক হাসান মুক্তিযোদ্ধা আর তাঁর স্ত্রীর চরিত্রে রুনা খান অভিনয় করছেন। চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করে পরবর্তী সময়ে শুটিং হবে বান্দরবান ও পুবাইলে।
চট্টগ্রামে শুটিংয়ের এক ফাঁকে পরিচালক পঙ্কজ পালিতের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, গল্পটি দারুণ। গল্পে চমক আছে, আছে আবেগও। তাই কাজ করে পুরো টিমই আনন্দিত। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রটি রওনক হাসান অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। এর আগে তিনি ‘নকশিকাঁথার জমিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আর রুনা খান সরকারি অনুদানে প্রথম অভিনয় করেন ‘ছিটকিনি’ চলচ্চিত্রে। এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সমালোচক বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও পেয়েছেন রুনা খান।
প্রায় ৩৩ বছর পর ঘটনাটি আবার সামনে এনেছেন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তাঁর গল্প নিয়েই মূলত সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন পঙ্কজ পালিত। ছবিতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সন্তানকে সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিসূত্রে উঠে আসে ১৯৭১।
এরপর ‘গহীন বালুচর’ ও ‘কালো মেঘের ভেলা’ চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। এটি তাঁর অভিনীত সরকারি অনুদানের চতুর্থ চলচ্চিত্র। তৌকীর আহমেদের পরিচালনায় তৈরি ‘হালদা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০১৭ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীও নির্বাচিত হন রুনা খান।
আরও পড়ুন
-
সড়ক দুর্ঘটনা জাতীয় সমস্যা, সড়ক আইনের আওতা বাড়ানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
-
ছয় মাস ধরে নিখোঁজ যুবককে পাওয়া গেল মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে, পেটে কাটা দাগ
-
তুরস্ক কিনেছে বিপুল সোনা, আরও যেসব কারণে বেড়েই চলেছে সোনার দাম
-
লোকসভা নির্বাচনে কাশ্মীরে কেন প্রার্থী দিল না বিজেপি
-
জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে অনলাইন ফি নিয়ে নতুন ভোগান্তি