Thank you for trying Sticky AMP!!

শাকিব খান বললেন, মান্না ভাই মানেই আলাদা কিছু

মান্না ও শাকিব খান

আজ চিত্রনায়ক মান্নার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনে তাঁকে স্মরণ করেছেন ঢালিউডের আরেক নায়ক শাকিব খান। মান্নার অভিনয় এবং কাজের প্রশংসা করে শাকিব খান লিখেছেন, মান্নার সমকক্ষ দ্বিতীয় কেই নেই। তিনি অভিনেতা হিসেবে ছিলেন অদ্বিতীয়। তাঁর অভিনয়ের আলাদা স্বাক্ষর আছে।

মান্না ও শাকিব খানের প্রথম পর্দায় দেখা হয় ২০০১ সালে। ছবির নাম ‘গণদুশমন’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল। ছবিতে নায়িকা ছিলেন পপি। এরপর ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই দুই অভিনয়শিল্পীকে দেখা গেছে মাত্র চারটি ছবিতে। অন্য ছবিগুলোর নাম ‘সিটি টেরর’, ‘মায়ের মর্যাদা’ ও ‘ভালোবাসার দুশমন’। শাকিব খান জানান, মান্না ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তিনি বাস্তব ও ক্যামেরার সামনে ছিলেন একদমই ভিন্ন চরিত্রের মানুষ। বললেন, ‘মান্না ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক স্মৃতি তৈরি হয়েছে। শুটিং ইউনিটে মান্না ভাইকে সব সময় দেখতাম, খুবই সাধারণ একটা মানুষ। সেই মানুষটাই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে পুরোটা বদলে যেতেন। প্রতিটি জায়গায় নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করে গেছেন। তিনি প্রতিটি পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতেন।’

চিত্রনায়ক মান্না

আশি ও নব্বই দশকের হাতে গোনা কিছু ছবিতে অশ্লীলতা ছিল। ১৯৯৭ সাল থেকে অশ্লীল ছবির সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০০৩ সাল থেকে টানা কয়েক বছরে বাংলা ছবিতে ব্যাপকভাবে অশ্লীলতা চলতে থাকে। বিরতি দিয়ে এই পরিস্থিতি চলতে থাকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত। এই সময়ে চলচ্চিত্রে ‘কাটপিসের’ পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে চলচ্চিত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন অনেক তারকা, নির্মাতা ও প্রযোজক। ভালো মানের ছবির সংখ্যা কমে যেতে থাকে। এই সময়ে বাংলা চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের গহ্বর থেকে একাই বেশ খানিকটা তুলে আনেন প্রয়াত নায়ক মান্না। এ সম্পর্কে শাকিব খান বলেন, ‘অশ্লীল সময়ের পর আমার যখন “স্ট্রাগল পিরিয়ড”, তখন মান্না ভাই তাঁর অবস্থান থেকে একচুলও নড়েননি। তিনি একের পরে এক তাঁর প্রডাকশন হাউস থেকে ভালো ছবিতে লগ্নি করেছেন। আর ভালো ছবিতে অভিনয় করে গেছেন। মান্না ভাই মানেই আলাদা কিছু। তাঁর ছবির একটা দৃশ্য দেখলেই বোঝা যেত, এটা মান্নার সিনেমা। এমন একজন অভিনেতা হঠাৎ চলে যাওয়ায় ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে যায়।’

শাকিব খান

দিলীপ বিশ্বাসের সর্বশেষ ছবি ‘মায়ের মর্যাদা’। এই ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মান্না ও শাকিব খান। সেই সিনেমার একটি দৃশ্যের ছবি ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন শাকিব খান। ছবিতে তাঁর সঙ্গে মান্না। ছবিটি পোস্ট করে শাকিব লিখেছেন, ‘আপনি ছিলেন অতুলনীয় (আনপ্যারালাল)। আপনার কাজগুলোতে আলাদা স্বকীয়তা ছিল। ভীষণ মিস করি আপনাকে। ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আপনার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। প্রিয় মান্না ভাই, যেখানেই থাকুন শান্তিতে থাকুন।’ মান্নাকে নিয়ে এমন স্ট্যাটাসের নিচে অনেকেই শাকিব খানের প্রশংসা করছেন। রাকিব হোসেন নামের একজন মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘মহানায়ক মান্নাকে স্মরণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা দুজনই বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘মান্নাকে আনপ্যারালাল বলে সম্মান দিয়ে আপনি বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন। অভিনেতা হিসেবে আপনি এগিয়ে যান।’
অভিনেতা মান্নার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দিনটিতে তাঁকে স্মরণ করে টাঙ্গাইল ও ঢাকায় থাকবে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া সমাবেশ। মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না জানান, সম্প্রতি তিনি টাঙ্গাইলে গিয়ে মান্নার স্মরণ অনুষ্ঠানের সব ব্যবস্থা করে এসেছেন। মান্নার কর্মস্থল এফডিসি, তাঁদের বাসা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলি চলচ্চিত্র থেকে এ অভিনেতাকে স্মরণের আয়োজন করা হয়েছে।

মান্না

প্রয়াত অভিনেতা মান্নার জন্ম টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতীতে। তাঁর আসল নাম এস এম আসলাম তালুকদার। ছোটবেলা থেকে সিনেমার প্রতি তাঁর ছিল প্রচণ্ড ঝোঁক। ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গনে পা রাখেন তিনি। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাশেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন মান্না। নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর পর পরিচালকদের চোখে একমাত্র আস্থার নাম ছিল মান্না। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় মারা যান।

শাকিব খান