বাংলা সিনেমার অপরিহার্য এক চরিত্র খলনায়ক। চলতি বছরও সিনেমা ও নাটকে এমনই কিছু খল চরিত্র আলোচনায় এসেছে। গল্পের সংঘাত তৈরি থেকে শুরু করে নাটকীয়তায় পৌঁছাতে এই ‘খল’ অভিনেতারাই হয়ে ওঠেন অন্যতম চালিকা শক্তি।

১. তারিক আনাম খান (মেকাপ)
বছরের শুরুতেই মেকাপ সিনেমা দিয়ে ভিন্নভাবে পর্দায় উপস্থিত হয়েছিলেন তারিক আনাম খান। পর্দায় দেশের জনপ্রিয় নায়ক শাহবাজ খানের চরিত্রে অভিনয় করেন। উঠতি এক নায়িকার সঙ্গে সম্পর্ক ঘিরেই এই সিনেমার গল্প। শাহবাজ খানের দাপুটে নায়িকা একসময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পর্দায় নিষ্ঠুরতা দেখিয়ে দর্শককে আটকে রাখেন শাহবাজ। মেকআপের আড়ালে মানুষ কেমন, সিনেমায় সে চিত্র উঠে এসেছে। এটি পরিচালনা করেছেন অনন্য মামুন।
২. শহীদুজ্জামান সেলিম (দাগি)
মঞ্চ ও ছোট পর্দার অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমকে বেশ কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত বড় পর্দার খল চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। চলতি বছর মুক্তি পাওয়া বরবাদ, দাগি, জংলিসহ বেশ কিছু সিনেমায় তাঁকে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন শিহাব শাহীনের দাগি সিনেমায়। সিনেমাটিতে চোরাকারবারি চরিত্রে তিনি দারুণ অভিনয় করেছেন। সিনেমায় তাঁর হিন্দি-বাংলা মেশানো সংলাপ, চরিত্রায়ণ ছিল যথাযথ। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি খুব বেশি নয়, কিন্তু যতক্ষণ ছিলেন, ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছেন এই অভিনেতা।
৩. মিশা সওদাগর (বরবাদ)
সিনেমায় আরিয়ানের (শাকিব খান) বাবা আদিব মির্জার চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন মিশা সওদাগর। সচরাচর তাঁকে যেভাবে পর্দায় দেখা যায়, এখানে তাঁর উপস্থিতি ছিল তার চেয়ে ভিন্ন। বোঝাই যায়, তাঁর চরিত্রের উপস্থাপনা নিয়ে সিনেমাটির টিমকে ভাবতে হয়েছে। এটি পরিচালনা করেছেন মেহেদী হাসান।
৪. রাশেদ মামুন (দাগি)
চার বছর হয় নিজের পরিচয়ই যেন বদলে ফেলেছেন রাশেদ মামুন। তিনি এখন পুরোদস্তুর খল অভিনেতা। এ বছর দাগি সিনেমা দিয়ে আলাদা করে আলোচনায় আসেন। খল চরিত্রে নিশোর বিপরীতে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। এ ছাড়া সাংবাদিক চরিত্রে রাশেদ মামুনকে ভিন্নভাবে দেখা গেছে জংলি সিনেমায়। সেটিও প্রথম দিকে নেতিবাচক চরিত্র ছিল।
৫. সুমন আনোয়ার (চক্কর ৩০২)
একসময় পরিচালক হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছিলেন। পরে সিনেমা ও ওটিটিতে অভিনেতা হিসেবে নিয়মিত হয়েছেন বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে খল চরিত্রে দেখা যায়। ২০২৫ সালে চক্কর ৩০২ সিনেমায় নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরেছেন। গন্ডার বাবু চরিত্রটিতে তাঁর সংলাপ বলা, অভিব্যক্তি ও শরীরী ভাষা<bha>;</bha> প্রধান চরিত্র মোশাররফ করিমের সঙ্গে তাঁর টক্কর ছিল দেখার মতো। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন শরাফ আহমেদ।
৬. সৈয়দ এজাজ আহমেদ (এশা মার্ডার: কর্মফল)
মঞ্চে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা আগে থেকেই ছিল। পরে নাম লেখান বিজ্ঞাপনচিত্রে। সেখান থেকেই ডাক পান এই সিনেমায়। এক সিনেমা দিয়েই বাজিমাত। সিনেমায় বিকারগ্রস্ত এক ক্রমিক খুনির চরিত্রে রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন এই নবাগত অভিনেতা। ছবির প্রধান চরিত্র বাঁধনের সঙ্গে তাঁর সিনেমার শেষ দৃশ্যটি মনে রাখার মতো।
৭. মনির হোসেন (নীলচক্র)
তাণ্ডব সিনেমায় গতানুগতিকভাবে উপস্থিত হলেও ‘নীলচক্র’–তে একেবারেই চমকে দেন মনির হোসেন। ছবিতে পুরাোদস্তুর নিজেকে ভেঙেছেন উধাও সিনেমার প্রধান অভিনেতা। সিনেমায় তাঁর অভিনীত চরিত্রটির নাম জ্যাক। চরিত্রটি বাস্তবায়নে তিনি উচ্চ স্বরে সংলাপ বা চড়া অভিনয়ের পথে যাননি। চোখের ভাষা, থেমে থেমে কথা বলা আর শরীরী অভিব্যক্তির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মিঠু খান।