মিশা সওদাগর দেশে থাকলেও জায়েদ খান ও মাহি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন
মিশা সওদাগর দেশে থাকলেও জায়েদ খান ও মাহি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন

জায়েদ, মাহিরা বিদেশ কেন? জানালেন মিশা সওদাগর

একসময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন মানেই ছিল মিশা–জায়েদ প্যানেলের দাপট। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এখন সেই চিত্র আর নেই। মন্দা বাজার, কাজের সংকট আর অনিশ্চয়তার কারণে আগের মতো জমজমাট নেই এফডিসি, বদলেছে শিল্পীদের জীবনধারাও। অনেকে দেশের বাইরেও পাড়ি জমাচ্ছেন।
মিশা সওদাগর দেশে থাকলেও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বেশ আগেই তিনি আমেরিকায় যান বলে জানা গেছে। জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়েও দেশে ফেরেননি এই অভিনেতা। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জায়েদ খান। পাশাপাশি উপস্থাপনাতেও যুক্ত হয়েছেন তিনি। ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নায়ক নতুনভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রবাসে।

অন্যদিকে জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর রয়েছেন দেশেই। সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিল্পীদের দেশ ছাড়ার প্রসঙ্গ উঠে আসে। উপস্থাপক প্রশ্ন তোলেন—জায়েদ খান তো বিদেশে, শুধু তিনিই নন, অনেক শিল্পীই এখন দেশের বাইরে। এর কারণ কী?

পযর্দায় মিশা সওদাগর

এই প্রশ্নের উত্তরে মিশা সওদাগর কোনো রাখঢাক না করেই বলেন, ‘কাজ নেই! কাজ না থাকলে মানুষ কী করবে?’
বিস্তারিত ব্যাখ্যায় শিল্পীদের বাস্তবতার কথাই তুলে ধরেন মিশা। তিনি বলেন, ‘কাজ থাকুক আর না থাকুক, একজন শিল্পী হিসেবে আমাদের একটা নির্দিষ্ট ইমেজ ধরে রাখতে হয়। চেহারা, গেটআপ, নিজের একটি গাড়ি, ভালো মোবাইল—এসব তো থাকতেই হয়। ঘরের ড্রইংরুমটাও একটু গোছানো রাখতে হয়। কিন্তু এই স্যাক্রিফাইসগুলো কেউ বোঝে না। এগুলো একজন শিল্পীই শুধু বুঝতে পারে।’

বর্তমান চলচ্চিত্র শিল্পের করুণ অবস্থার কথাও তুলে ধরেন মিশা সওদাগর। তাঁর ভাষায়, ‘এখন সত্যি বলতে কোনো কাজ নেই। যারা বিদেশে গেছে, তারা কেউ শখ করে যায়নি। অমিত হাসানের কথাই ধরেন—উনি কত সিনেমার নায়ক! ইমন, আলেকজান্ডার বো—এরাও বিদেশে। বাইরে গেলে অন্তত কাজ করে জীবনটা চালানো যায়।’
শিল্পীর জীবন শুধু পর্দার ঝলকানিতে সীমাবদ্ধ নয়—এ কথাই বারবার বলেন মিশা। তাঁর মতে, ‘যখন দেশে পরিবার চালানোর মতো অবস্থাই থাকে না, তখন একজন শিল্পী করবে কী? বিদেশে যাওয়া ছাড়া তো উপায় থাকে না। শিল্পী কি ইচ্ছা করে নিজের দেশ, নিজের প্রিয় জায়গা ছেড়ে চলে যায়?’

এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা মাহিয়া মাহির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মিশার স্পষ্ট মন্তব্য, ‘মাহিয়া মাহিও এখন আমেরিকাতে। ওদের দোষ দিয়ে কী হবে? দেশে যদি কাজ থাকত, তাহলে সবাই এখানেই থাকত।’

মাহিয়া মাহির সঙ্গে জায়েদ খান

মিশা সওদাগরের এই বক্তব্য শুধু একজন শিল্পীর ব্যক্তিগত উপলব্ধি নয়; বরং তা ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান বাস্তবতারই প্রতিফলন। কাজের অভাব, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর জীবনের দায়—এই তিনের চাপে দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছেন একের পর এক শিল্পী। প্রশ্ন থেকে যায়—এই সংকট কাটানোর উদ্যোগ কবে এবং কীভাবে আসবে?