রটারড্যাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা ‘মাস্টার’। রেজওয়ান শাহরিয়ারের রাজনৈতিক থ্রিলারটি জায়গা করে নিয়েছে উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগ ‘বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন’-এ।
এক ফেসবুক পোস্টে নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার জানান, নানা চড়াই–উতরাই পেরিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘গত এক বছর আমাকে যেন আস্ত এক পাহাড় ডিঙাতে হয়েছে। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণের যে চিরায়ত সংগ্রাম, আমি সেটার কথা বলছি না। বলছি, এই রাষ্ট্র আমার চারপাশে যে সুবিশাল দেয়াল তুলেছে, চেষ্টা করেছে আমাকে বা আমার মতো হয়তো আরও অনেককেই (সবার গল্প জানা নেই) দমিয়ে রাখতে, সেই বাধার কথা। মামলা, হামলা, হুমকি আর বানোয়াট সব তকমা সামলাতে সামলাতে মনে হচ্ছে নিজের জীবনটাই একটা পলিটিক্যাল থ্রিলার। আমাকে যাঁরা কাছ থেকে চেনেন, তাঁরা জানেন এই পলিটিক্যাল পারসিকিউশনের স্বরূপটি কেমন। যাঁরা জানেন, তাঁরা তো জানেনই। আর যাঁরা জানেন না, হয়তো কোনো একদিন জানবেন।’
এর আগে ‘নোনাজলের কাব্য’ সিনেমা নির্মাণ করে পরিচিতি পেয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার। তিনি লিখেছেন, ‘সিনেমা শক্তি, সিনেমা স্বপ্ন, সিনেমাই জীবন—গত একটা বছর এই সত্য হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। সিনেমাই আমাকে অক্সিজেন দিয়েছে। আমার দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি “মাস্টার”-এর কাজ অনেকবারই থমকে গিয়েও শেষ পর্যন্ত থামেনি। থামতে দিইনি। আর এই নির্মাণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন জুগিয়েছেন অনেক শুভানুধ্যায়ী। কঠিন সময়ে যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের সকলকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ।’
মধুপুর-ধনবাড়ীর মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘যাঁদের কথা না বললেই নয়, তাঁরা হলেন সেই মধুপুর-ধনবাড়ীর মানুষ। ছবির নির্মাণকালে আমরা দুমাস ছিলাম ওখানে। প্রতিদিনই রাস্তাঘাটে, ঘরে-বাইরে সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। এই ছবির সাথে যুক্ত অনেকেই গত এক বছর পরিবারের কাছে যেতে পারেননি; তাঁরা তাঁদের নিজের গ্রামে, হাটে বা বাজারে নিরাপদ নন। অপরাধীরা সাজা পাবে, নিরপরাধীরা শান্তিতে জীবন যাপন করবে—খুবই সরল সমীকরণ। কিন্তু এই দেশে কখনোই তা হয় না।’
২০২৪-এর মার্চ-এপ্রিলে মাস্টার সিনেমার শুটিং হয়েছে। ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ফজলুর রহমান বাবু, শরীফ সিরাজ, তাসনোভা তামান্না, আমিনুর রহমান ও মাহমুদ আলম।