কাজ করতে গিয়ে জাফর ইকবালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ববিতা। সুদর্শন, স্মার্ট ও স্টাইলিশ নায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ নায়কের সঙ্গে প্রেমের কথা অকপটে স্বীকারও করেছেন বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান জাফর ইকবাল। গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে ববিতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যান তিনি। পরবর্তী সময়ে অগোছালো, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ নানা কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত হন এই নায়ক। শেষ সময়ে ববিতাও জানতে পেরেছিলেন জাফর ইকবালের ক্যানসারের খবর।
জাফর ইকবালের শেষ সময়ের দিনগুলো নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় ববিতার। জানান, শেষদিকে শুটিংয়ে অমনোযোগী হয়ে উঠেছিলেন জাফর ইকবাল। শুটিংয়ে দেরি করে আসা থেকে ঠিকমতো সময় দিতেন না তিনি। তাই ওই সময়ের অনেক প্রযোজক তাঁকে সিনেমায় নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইতেন না। প্রযোজকদের বুঝিয়ে বাদল খন্দকারের একটি ছবিতে জাফর ইকবালের দায়িত্ব নেন ববিতা। সেবারই শেষবারের মতো দুজন একসঙ্গে শুটিং করেন।
শুটিং সেটেই অনেক দিন পর তাঁদের দেখা হয়। দুদিন শুটিং হয়েছিল সিনেমাটির। শুটিংয়ের একটি দৃশ্য ছিল এ রকম, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন জাফর ইকবাল আর ববিতা চিকিৎসক। সেদিন সত্যি সত্যিই শরীরে ক্যানসার নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অভিনয় করেছিলেন জাফর ইকবাল। কাউকে কিছু জানাননি তিনি। তবে সেদিন ববিতার চোখে জাফর ইকবালকে দেখাচ্ছিল বেশি উদাসীন, অগোছালো। মনে হচ্ছিল, অসুস্থ। জিজ্ঞেসও করেছিলেন, ‘আপনাকে এমন কেন দেখাচ্ছে? অসুস্থ নাকি?’ তবে উত্তরে জাফর ইকবাল কী জানিয়েছিলেন, তা বলেননি তিনি।
এর কিছুদিন পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন জাফর ইকবাল। তখন জানতে পারেন, সেদিন (হাসপাতালের শুটিংয়ের দিন) জাফর ইকবাল শরীরে ক্যানসার নিয়ে শুটিং করেছিলেন। খবরটা শুনে খুব মন খারাপ হয়েছিল ববিতার। মন ভেঙে গিয়েছিল। তবে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সময় মিলিয়ে যাওয়া হয়নি ববিতার। সাহসেও কুলায়নি। একদিন হঠাৎই আসে মৃত্যুসংবাদ। মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে আসা হলে শেষবার জাফর ইকবালকে দেখতে যান ববিতা। শোনা যায়, সেদিন সাদা শাড়িতে এফডিসিতে জাফর ইকবালকে বিদায় দিতে আসেন ববিতা।