কবরী, ববিতা ও শাবানা
কবরী, ববিতা ও শাবানা

শাবানা, কবরী ও ববিতা—তিন নায়িকার সম্পর্ক কেমন ছিল

শাবানা, ববিতা ও কবরী—ষাটের দশক থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু। অল্প বয়সে অভিনয় শুরু করে দেশের চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়িকা হয়ে ওঠেন। নায়ককেন্দ্রিক চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে একটা সময় নায়িকা হিসেবে তাঁরাও বেশ প্রভাব বিস্তারও করতে শুরু করেন। একচেটিয়া কাজ করেছেন শাবানা–ববিতা ও কবরী। এই একচেটিয়া কাজের কারণে কেউ কেউ মনে করেন, তাঁদের মধ্যে সম্পর্কটা বুঝি রেষারেষির ছিল। পর্দার মতো প্রতিযোগিতা কি পর্দার বাইরে ছিল—কী বলছেন শাবনা।

ববিতা

শাবানা দুই যুগের বেশি সময় অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছেন। এর মধ্যে একাধিকবার অভিনয়ে ফেরার কথা শোনা গেলেও এখন আর কোনো সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে স্বামী, সন্তান ও নাতি–নাতনি নিয়ে নিজের মতো করে দিন কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে ববিতাকে সর্বশেষ চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা গেছে ২০১৫ সালে, ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ নামে একটি ছবি ওই বছরে  মুক্তি পায়। তবে অভিনয় বন্ধ করেছেন তারও কয়েক বছর আগে। গেল এক দশকে যে অভিনয়ের প্রস্তাব পাননি, তা কিন্তু নয়। নিজের মনের মতো গল্প কিংবা চিত্রনাট্য না হওয়ায় কোনো ছবিকে হ্যাঁ বলেননি। আবার এখন তিনি বেশির ভাগ সময় বাংলাদেশ–কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া–আসার মধ্যে থাকেন। কানাডায় একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন, আর যুক্তরাষ্ট্রে ভাইয়ের পরিবার। এই দুই কিংবদন্তির মধ্যে একমাত্র কবরী নিজেকে অভিনয় ও পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রেখেছিলেন। ছিলেন চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট নানা সভা–সেমিনারে। চার বছর আগে বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়েখ্যাত কবরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির আগমুহূর্ত পর্যন্ত কবরী ‘এই তুমি সেই তুমি’ শিরোনামে একটি ছবির শুটিং করছিলেন, এই ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি অভিনয়ও করেন।

কবরী, ববিতা ও শাবানা

শাবানা জানান, অনেকে যদিও মনে করেন তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, এটা আসলে তাঁরা ভাবতেনই না।

শাবানা বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, শাবানা–কবরী কারও সঙ্গে আমার কোনো রেষারেষি ছিল না। পরিচালকেরা যখন আমাকে পছন্দ করতেন, আমি আমার মতো কাজ করতাম। অন্যদের নিয়ে কখনোই ভাবতাম না। কে আমার প্রতিযোগী বা কে কী। ববিতার সঙ্গে যেমন আমার কয়েকটা ছবিতে অভিনয় করা হয়েছে, তেমনি কবরীর সঙ্গেও একটি ছবিতে অভিনয় করা হয়েছে—“অবাক পৃথিবী”। অথচ কবরীর সঙ্গেও আমার গলা জড়াজড়ি করা অনেক ছবি আছে। তবে দুজনের মধ্যে ববিতার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আমাকে ফোনও করত। আমেরিকা আসার পরও ফোন করে খবর নিত। জিজ্ঞেস করত, কেমন আছো আপা? সত্যি কথা বলতে, আমার কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। আমিও কাউকে কোনো দিন প্রতিযোগী হিসেবে ভাবতাম না।’

কবরী

কথায় কথায় শাবানা আরও বলেন, ‘আমাদের যত প্রতিযোগিতা, তা পর্দায় চলত। সবাই যার যার অভিনয় নিয়ে মগ্ন থাকত। বাস্তবে আমাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণই ছিল। কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজনে দেখা হলে আমরা একে অপরের সঙ্গে আন্তরিকভাবে মিশতাম। কথা বলতাম। একে অন্যের পরিবারের খোঁজখবরও নিতাম।’

শাবানা।

মাত্র আট বছর বয়সে সিনেমায় অভিনয়ে নাম লেখান শাবানা। এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ ছবিতে তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ‘চকোরী’ ছবিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় শুরু। দুই যুগের বেশি সময় অভিনয় থেকে দূরে সরে আছেন চলচ্চিত্রের গুণী এই অভিনয়শিল্পী। অভিনয়জীবনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হুট করেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি।