তুলনা মানেই হতাশা, বিষণ্নতা: অর্ষা

নাজিয়া হক অর্ষা। ছবি: ফেসবুক
নাজিয়া হক অর্ষা। ছবি: ফেসবুক

তখন কলেজের ছাত্রী অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা। কলেজ ছুটি। ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিতেন অনেকটা সময়। সে রকম একদিন ঘুম থেকে উঠেই দরজা খুলতে গিয়ে তিনি চমকে ওঠেন। দরজা বাইরে থেকে আটকে রাখা। শুরুতে এমনটা দেখে ঘাবড়ে যান।

প্রায় ১৫ মিনিট ডাকাডাকির পর দরজা খোলা হলে তিনি চমকে যান। সেদিন ছিল অর্ষার জন্মদিন। বন্ধুরা পুরো বাড়ি সাজিয়ে, কেক এনে জন্মদিনে চমকে দেন। এখনো বিশেষ এই দিনের কথা ভোলেন না এই অভিনেত্রী। আজ ২১ মে এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। দিনটি নিজের মতো করে কাটাতেই তিনি পছন্দ করেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একেবারেই আলাদা অর্ষা। সবার মতো ভবিষ্যতে এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে, এমন পরিকল্পনায় বিশ্বাসী নন এই অভিনেত্রী। তিনি নিজের মতোই করেই সবকিছু করতে পছন্দ করেন। ‘আমি কোনো পরিকল্পনা করে এগোতে চাই না। আমি যা অর্জন করেছি, তাতেই আমি খুশি। আমি কোনো কিছু নিয়েই হতাশ নই। আমি কারও সঙ্গে কাজ নিয়ে তুলনা করি না,’ এক সাক্ষাৎকারে প্রথম আলোকে বলেছিলেন অর্ষা।

নাজিয়া হক অর্ষা। ছবি: ফেসবুক

ক্যারিয়ারে কে এগিয়ে গেলেন, সেটাও অর্ষাকে স্পর্শ করে না। এই অভিনেত্রী মনে করেন, যেকোনো অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে তুলনা কখনোই ইতিবাচক কিছু নিয়ে আসে না। তিনি বলেন, ‘তুলনা মানেই একটা হতাশা, বিষণ্নতার জায়গা। তার চেয়ে আমি যা করেছি, করছি, তার মধ্যেই সুখ খুঁজি। এ জন্য আমার দর্শকেরা খাঁটি। আমি যা, সেটাকেই তাঁরা মূল্যায়ন করেন। প্রতিযোগিতায় গিয়ে জেনেবুঝে মানুষ হতাশ হবে কেন? এ কারণে যাঁর যেটুকু প্রাপ্তি, যেটুকু অর্জন, সেটা নিয়েই থাকা উচিত।’

ইদানীং অনেক অভিনয়শিল্পী মূল জায়গা থেকে সরে ভাইরাল হওয়ার জন্য ভিন্নভাবে ফেসবুকে নিজেদের উপস্থাপন করছেন, সেখানেও ব্যতিক্রম অর্ষা। তিনি নিজেও এসবে ভাইরাল হতে চান না। এই অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভাইরাল তো কেউ কাজের জন্য হবেন। অভিনেতা তাঁর অভিনয়ের জন্য জন্য ভাইরাল হবেন। সেটা গঠনমূলক ও গ্রহণযোগ্য ইতিবাচক কাজের জন্য। আমি নিজের অভিনয়টা ঠিকমতো করছি, সেটা দেখে মানুষ আমাকে পছন্দ করছেন। সেটাই তো গ্রহণযোগ্য।’

নাজিয়া হক অর্ষা

অর্ষা নিজেও সব সময় গুরুত্ব দেন ঠিকমতো নিজের কাজটি করার দিকে। পেশাগত জায়গায় দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতা তাঁর কাছে অগ্রাধিকার পায়। ‘কিন্তু আমি যদি নিজের কাজ ঠিকমতো না করি, অভিনয়ে মনোযোগ না দিই, অথচ আমি আউটলুক, শো অফনেসে মনোনিবেশ করি, তাহলে ভাইরাল হওয়ার বিষয়টা বেশি দিন টিকে থাকে না। তাঁরা দু-এক বছর টিকবেন, তাঁর জায়গায় আরেকজন ভাইরাল চলে আসবেন,’ বলেন অর্ষা।

নাটক, চলচ্চিত্র ও ওটিটি—তিন মাধ্যমে নিয়মিত কাজ করলেও ওটিটির কাজগুলো অর্ষাকে আলাদা করে টানে। এ প্রসঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তিন মাধ্যমেই অভিনয় করতে ভালো লাগে। তবে ওয়েব ফিল্ম বা ফিল্মে কাজ করলে চরিত্রের মধ্যে থাকা যায়। এই কাজগুলো অনেক পরিকল্পনা নিয়ে করতে হয়। কাজগুলো গোছানো থাকে। অভিনয়ের জায়গা থেকে চিন্তার সুযোগ বেশি থাকে।’

নাজিয়া হক অর্ষা